ঢাকা মেডিকেলে মুক্তামনি’র চিকিৎসা শুরু

সাতক্ষীরায় বিরল রোগে আক্রান্ত সেই মুক্তামনিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে আসা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে তাকে বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর পরপরই বার্ন ইউনিটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন তার চিকিৎসার সব দায়ভার গ্রহণ করেন।

তিনি শিশুটির রোগের এই অবস্থা দেখে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের খুবই কষ্ট লাগে যখন দেখি এসব রোগীকে অবহেলা করা হয়। সকালে মেয়েটিকে আমাদের কাছে নিয়ে আসা হয়েছে। যদি আরো আগে তাকে নিয়ে আসা হতো তাহলে আরো ভালো হতো। আমার তাকে ভর্তির ব্যবস্থা করেছি। শিশুটিকে পর্যবেক্ষণ করে তার প্রয়োজনীয় সব চিকিৎসা দেওয়া হবে।

ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, আমরা বার্ন ইউনিটের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল কালামকে প্রধান করে ৮ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি আলসার।

তিনি আরও বলেন, মুক্তা রক্তশূন্যতা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। ওর শরীরে ইনফেকশন আছে। ফিট হইতে আরো ২ সপ্তাহ সময় লাগবে।

সাতক্ষীরার ১২ বছরের শিশু মুক্তামনি। সে সদর উপজেলার কামারবাইসা গ্রামের মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেনের মেয়ে। ইব্রাহীম হোসেন দাম্পত্য জীবনে দুই যমজ কন্যা ও এক পুত্রসন্তানের জনক। তার দুই যমজ সন্তানের মধ্যে হীরামনি বড় ও মুক্তামনি ছোট। আর ছোট ছেলে আল-আমিনের বয়স এক বছর তিন মাস।

মুক্তামনির বাবা ইব্রাহীম হোসেন জানান, জন্মের প্রথম দেড় বছর ভালোই ছিল হীরামনি ও মুক্তামনি। তার কিছুদিন পর মুক্তামনির ডানহাতে একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে তা বাড়তে থাকে। সাথে চলে স্থানীয় চিকিৎসাও। দেখলে মনে হবে গাছের বাকলের (ছালের) মতো ছেয়ে গেছে পুরো হাতটি। আক্রান্ত ডান হাত তার দেহের সব অঙ্গের চেয়েও ভারী হয়ে উঠেছে। ভেতরে পোকা জন্মেছে। যন্ত্রণায় মুক্তামনি সব সময় অস্থির। ডাক্তার বলছেন এ ব্যাধি তার দেহের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে।

ইব্রাহীম হোসেন আরও জানান, মুক্তার সারাদেহে রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তার শরীর শুকিয়ে যাচ্ছে। শুধু হাতের ভার বাড়ছে। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে দেখানো হয়েছে মুক্তামনিকে। কেউ কোনো সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেননি। রোগের মাত্রা শুধু বেড়েই চলেছে। অর্থাভাবেহতাশ বাবা ইব্রাহীম গত ছয় মাস যাবত চিকিৎসাবিহীন অবস্থায় মুক্তাকে বাড়িতে রেখে কেবল ড্রেসিং করছে।

আজকের বাজার:এলকে/ এলকে/ ১১ জুলাই ২০১৭