মুজিববর্ষে ফেনীতে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগ

মুজিব জন্মশতবর্ষে ফেনীকে ভিক্ষুকমুক্ত করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ফেনী জেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যে প্রথম ধাপে ৬০জন ভিক্ষুককে বিকল্প কর্মস্থান সৃষ্টিতে জেলার ছয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ১৮ লক্ষ টাকা অনুমোদন দিয়েছেন ফেনী জেলা প্রশাসক মোঃ ওয়াহিদুজজামান। জেলা প্রশাসক জানান, সারাদেশে ভিক্ষুক পুনর্বাসনকল্পে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত নির্দেশনা মোতাবেক সকল সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির একদিনের বেতন প্রদানের মাধ্যমে এ কর্মসূচির জন্য প্রাথমিকভাবে অর্থের ব্যবস্থা হয়। তিনি জানান, ভিক্ষুক পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তাদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাধারণ শাখা সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে নির্বাচিত ৬০জনের ইচ্ছানুযায়ী তাদের পুনর্বাসন করা হবে। এগুলোর মধ্য হাঁস-মুরগী পালন, গবাদি পশু পালন, সেলাই মেশিন ও অন্যান্য সুবিধাদি, অটো রিকশা, ভ্যান গাড়ি প্রদান, ভাসমান ফলের দোকান, হাতে বোনা চাটাই এবং কসমেটিকস-স্টেশনারি ব্যবসা উল্লেখযোগ্য। একই সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে ভিক্ষুক পুনর্বাসন ফান্ড গঠনের মাধ্যমে কর্মসূচির অর্থায়ন নিশ্চিত করা হচ্ছে। একই সূত্র জানায়, উক্ত টাকার সাথে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল হতে অনুদান যুক্ত করে এ পর্যন্ত সঞ্চিত অর্থের পরিমান ৫২ লক্ষ ৬০ হাজার ৫শ ২৪ টাকা।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোছাঃ সুমনী আক্তার জানান, তালিকাবদ্ধ ভিক্ষুকদের মধ্যে উপজেলা প্রতি ১০জন করে ছয় উপজেলা হতে ৬০ জনকে প্রথম ধাপে পুনর্বাসনের জন্য চ’ড়ান্ত করা হয়েছে। শীঘ্রই এটি বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এ তালিকা প্রণয়ন করে থাকেন। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরীন সুলতানা জানান, ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য ইউএনওকে প্রধান করে ১৫ সদস্যের কমিটি রয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এতে উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন। ভিক্ষুক পুনর্বাসনে প্রথম ধাপে সদর উপজেলা হতে ১০ জন ভিক্ষুক নির্বাচনের প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভিক্ষুকের চলমান আর্থিক অবস্থা, বয়স ও কর্মক্ষমতা বিবেচনায় রেখে তালিকা করা হয়েছে। সাধারণ শাখা সূত্রে জানা যায়, ৬০ জন ভিক্ষুকের মধ্যে নারী ৩৭ জন। প্রতিবন্ধী রয়েছে ৭ জন। সাধারণ শাখায় দায়িত্বরত সহকারি কমিশনার তাছলিমা শিরীন জানান, ফেনী সমাজসেবা কার্যালয় প্রেরিত ২০১৯ সালের ভিক্ষুক তালিকা অনুযায়ী এ কর্মসূচির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এতে ভিক্ষুকের সংখ্যা ১ হাজার ৭শ ২৯ জন। এদের পুনর্বাসনের কথা থাকলেও সরকারের একাধিক কর্মসূচির আওতায় ইতোমধ্যে ৩শ ৪৮ জন ভিক্ষুককে পুনর্বাসিত করা হয়েছে। তিনি জানান, অবশিষ্ট ১ হাজার ৩শ ৮১ জনের তালিকার ভিত্তিতে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সদর উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নের তেতৈয়া গ্রামের খোতিজা বেগম (৪৫) ৬০জন সুবিধাভোগীদের একজন। গবাদি পশু পালনে আগ্রহী খোতিজা বেগম বলেন, মেয়ে বিয়ের উপযুক্ত। আমি ভিক্ষুক তাই ভালো সম্বন্ধ আসছে না। তিনি জানান, গরু পালনের সুযোগ পেলে আর ভিক্ষা করবেন না। সদরের কাজিরবাগ ইউনিয়নের পশ্চিম সোনাপুর গ্রামের জাফর আহমদ (৪৪) ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে সহযোগিতা পেলে মালামাল পরিবহনের কাজ করবেন বলে জানান। তিনি জানান, অল্প জমি আছে। সহযোগিতা পেলে সবজি চাষ করবেন। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান