জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তিনি টাম্পের উদ্দেশ্যে বলেছেন,আপনারা মুসলমানদের বলেন জিহাদি-সন্ত্রাসী। ইরাক কী দোষ করেছে? লিবিয়া-আফগানিস্তান কী দোষ করেছে যে তাদের ধ্বংস করে দিলেন?’ মুসলমানরা নয়, আপনারাই সন্ত্রাসী।
মঙ্গলবার ১২ ডিসেম্বর দুপুরে জাতীয় পার্টির এক বিক্ষোভ সমাবেশে এরশাদ এসব কথা বলেন। জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ শেষে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি কাকরাইল মোড় হয়ে মৎস ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
গত ৬ ডিসেম্বর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বক্তৃতায় জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দেন এবং তেলআবিব থেকে মার্কিন দূতাবাস সেখানে সরিয়ে নেয়ার কথা জানান। এ ঘোষণার পর ফিলিস্তিনসহ মুসলিম বিশ্বে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। গাজার প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস নতুন করে ইন্তিফাদার ডাক দেয়। বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানানো হয়েছে এবং এই অঞ্চলের শান্তি নষ্টের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামি দলগুলো ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন থেকে ট্রাম্পের এ সিদ্ধান্তে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
এরশাদ ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন,জাতিসংঘের বিধি অনুসারে তারা এখানে রাজনীতি করতে পারে না। কিন্তু আপনি মুসলমানদের পুণ্যস্থান জেরুজালেমকে ইসরাইলের রাজধানী ঘোষণা দিয়েছেন। আপনার এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ কখনো মেনে নেবে না। এক বিন্দু রক্ত থাকতেও আমরা এটা কখনো মেনে নেব না।
জাপা চেয়ারম্যান বলেন,জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণার যে সিদ্ধান্ত ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়েছেন তা সমস্ত মুসলিম রাষ্ট্রকে ধ্বংসের পাঁয়তারা। কিন্তু ইসলামকে কেউ ধ্বংস করতে পারবে না। কারণ ইসলাম আল্লাহর ধর্ম।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত বলেন.জেরুজালেম হচ্ছে একটি পুণ্যস্থান। এখানে মুসলমানদের প্রথম কেবলা বায়তুল আকসা অবস্থিত। এখান থেকেই আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জন করতে আমাদের নবী হজরত মোহাম্মদ (সা.) পবিত্র মিরাজে গমন করেন। এটাকে ইসরায়েলের রাজধানী করার সিদ্ধান্ত একে অপবিত্র করার শামিল।
পবিত্র জেরুজালেমকে রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণকে জেগে ওঠার এবং বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়ে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন,তোমরা বেরিয়ে পড়ো রাস্তায়। একটাই স্লোগান, ট্রাম্পের ঘোষণা মানি না।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন,পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি.এম কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য এম.এম সাত্তার, কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, সাহিদুর রহমান টেপা, মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, নুর-ই-হাসনা লিলি চৌধুরী এমপি, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, সুনীল শুভ রায়, এস এম ফয়সল চিশতী, মীর আবদুস সবুর আসুদ, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, মেজর অবসরপ্রাপ্ত খালেদ আখতার,ভাইস চেয়ারম্যান- অধ্যাপক ইকবাল হোসেন রাজু, জহিরুল ইসলাম জহির, আরিফুর রহমান খান, আলমগীর সিকদার লোটন, নুরুল ইসলাম নুরু, দিদারুল আলম দিদার,উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূইয়া, মোঃ নোমান এমপি, নাজমা আক্তার ও শফিকুল ইসলাম সেন্টু। যুগ্ম মহাসচিব- গোলাম মোহাম্মদ রাজু, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, নুরুল ইসলাম ওমর এমপি, ইয়াহইয়া চৌধুরী এমপি, আশরাফ সিদ্দিকী, জহিরুল আলম রুবেল ও মহিলা বিয়ষক সম্পাদক অনন্যা হুসেইন সৌসুমীসহ আরো অনেকে।
সম্মিলিত জাতীয় জোট নেতাদের মধ্যে বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট নেতা- মাও: স.উ.ম আব্দুস সামাদ, অধ্যাপক এম.এম মোমেন, মাও: মাসুদ হোসেইন আল ক্বাদেরী, মাও: আব্দুল লতিফ, ইসলাম মহাজোট এর চেয়ারম্যান আবু নাছের ওয়াহেদ ফারুক সহ মাও: আবদুল লতিফ চৌ:, ক্বারী মাও: আসাদুজ্জামান, মুফতি মহিবুল্লাহ, বাংলাদেশ জাতীয় জোট বিএনএ চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি সহ অ্যাড. জাহাঙ্গীর হোসেন, শেখ মোস্তাফিজুর রহমান ও মোঃ আখতার হোসেনসহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
আজকরে বাজার:এলকে/ এলকে ১২ ডিসেম্বর ২০১৭