চট্টগ্রামে টানা পাঁচদিন করোনা ভাইরাসের বাহক সংখ্যা পঞ্চাশের মধ্যে থাকলো। গত ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ২৮১ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫০ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। সংক্রমণ হার ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ। জেলায় একটানা ছয়দিন কোনো করোনা রোগীর মৃত্যু হয়নি।
উল্লেখ্য, গতকালের ফলাফলের মধ্য দিয়ে করোনা ভাইরাসের বাহক সংখ্যা একটানা আঠারো দিন একশ’র নিচে এবং পাঁচদিন পঞ্চাশের নিচে থাকলো। এর মধ্যে গতকাল তিন মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সংক্রমণ হার ছিল করোনাকালের সর্বনিম্ন। কোনো রোগীও মারা যায়নি।
সর্বশেষ একশ’র বেশি (১২৭ জন) করোনার ভাইরাসবাহক শনাক্ত হয় ১২ জানুয়ারি। সেদিন ২ রোগীর মৃত্যু হয়। সংক্রমণের হার ছিল ১০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। জেলায় গত ছয়দিন করোনায় আক্রান্ত কারো মৃত্যু হয়নি।
সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে জানা যায়, নগরীর ছয়টি ও কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের ১ হাজার ২৮১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। নতুন শনাক্ত ৫০ জনের মধ্যে শহরের বাসিন্দা ৪৮ জন এবং হাটহাজারী ও সীতাকু- উপজেলার ১ জন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত ব্যক্তির সংখ্যা এখন ৩২ হাজার ৯৬৩ জন, যাতে শহরের বাসিন্দা ২৫ হাজার ৭৫০ ও গ্রামের ৭ হাজার ২১৩ জন।
গতকাল করোনায় কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। ফলে মৃতের সংখ্যা ৩৬৯ জনই রয়েছে। এতে শহরের বাসিন্দা ২৬৮ জন ও গ্রামের ১০১ জন। সুস্থতার ছাড়পত্র পেয়েছেন নতুন ৩৯ জন। ফলে মোট আরোগ্য লাভকারীর সংখ্যা ৩০ হাজার ৭৫৪ জনে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৪ হাজার ২০১ জন এবং হোম আইসোলেশনে ছিল ২৬ হাজার ৫৫৩ জন। হোম কোয়ারেন্টাইন বা আইসোলেশনে গতকাল যুক্ত হন ১২ জন, ছাড়পত্র নেন ১৫ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ১ হাজার ৩০২ জন।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) ল্যাবে।
এখানে ৯৩৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জন করোনার জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ল্যাবে ৫৬ জনের নমুনার মধ্যে ৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ল্যাবে ৫৫ টি নমুনার ৬ টিতে ভাইরাস থাকার প্রমাণ মেলে। ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু) ল্যাবে ২৩ টি নমুনার মধ্যে ২ টিতে ভাইরাসের উপস্থিতি মেলে। নগরীর একমাত্র বিশেষায়িত কোভিড চিকিৎসা কেন্দ্র আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএলে ২৫ জনের নমুনার ১৫ জন পজিটিভ চিহ্নিত হন।
বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরি শেভরনে ১৩১ টি নমুনার মধ্যে ৭ টি এবং মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ১০ টি নমুনায় ২ টিতে ভাইরাস আক্রান্ত সনাক্ত হয়। চট্টগ্রামের ৪৩ জনের নমুনা কক্সবাজার মেডিক্যাল কলেজ ল্যাবে পাঠানো হলে পরীক্ষায় সবগুলোরই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তবে, এদিন ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে কোনো নমুনা পরীক্ষা হয়নি।
ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে গত ২৪ ঘণ্টায় বিআইটিআইডি’তে ১ দশমিক ৪৯ শতাংশ, চমেকে ৭ দশমিক ১৪, চবিতে ১০ দশমিক ৯১, সিভাসু’তে ৮ দশমিক ৬৯, আরটিআরএলে ৬০ শতাংশ, শেভরনে ৫ দশশিক ৩৪ এবং মা ও শিশু হাসপাতালে ২০ শতাংশ সংক্রমণ হার নির্ণিত হয়। তথ্য-বাসস
আজকের বাজার/আখনূর রহমান