মেধাসম্পদ সুরক্ষা সম্মাননা ২০২১ পেলো আইপিডিসি ফাইন্যান্স

দেশের লুপ্তপ্রায় লোকসংগীতকে নান্দনিক উপস্থাপনার মাধ্যমে বর্তমান প্রজন্মের কাছে  পৌঁছে দেওয়ার মহৎ পরিকল্পনা ও কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আইপিডিসিকে ‘মেধাস্বত্ব সুরক্ষা সম্মাননা ২০২১’ এ ভূষিত করেছে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস। ২৩ এপ্রিল ২০২১ বেলা ৩টায় আন্তর্জাতিক কপিরাইট দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত ‘মেধাসম্পদ সুরক্ষায় কপিরাইটের গুরুত্ব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সেমিনারের প্রধান অতিথি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ, এমপি-এর উপস্থিতিতে এ সম্মাননা ঘোষণা করা হয়।

আইপিডিসি ফাইন্যান্স এর পক্ষ থেকে জনাব মমিনুল ইসলাম, এমডি এবং সিইও এসময় উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জনাব মোঃ বদরুল আরেফীন, সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জনাব মোঃ আবদুস সাত্তার, রেজিস্ট্রার, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর,  জনাব সাবিহা পারভীন, অতিরিক্ত সচিব, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সভাপতি, কপিরাইট বোর্ড । অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জনাব জাফর রাজা চৌধুরী, রেজিস্ট্রার অফ কপিরাইটস ।

মেধাসম্পদ সুরক্ষায় কপিরাইট রেজিস্ট্রেশন সনদ সংগ্রহের গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষা ও গবেষণা পেশায় জড়িত সৃজনশীল ব্যক্তিবর্গ, বুদ্ধিজীবী মহল, খ্যাতিমান শিল্পী-সাহিত্যিক এবং যারা সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত তাদের মধ্যে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সুরক্ষা গ্রহণে সচেতনতা বা আগ্রহ পরিলক্ষিত হয় না। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য ২০১৮ সাল থেকে কপিরাইট রেজিস্ট্রেশনকৃত মেধাসম্পদ কর্মসমূহের সৃজনশীলতা, আবেদনকারীর মেধাস্বত্ব সুরক্ষায় আগ্রহ, চর্চা বা প্রসারে অবদান ইত্যাদির ভিত্তিতে ‘মেধাসম্পদ সুরক্ষা সম্মাননা স্মারক’ প্রবর্তন করা হয়েছে।

বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশি লোকসংগীত প্রচারের জন্য গত ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে ‘আইপিডিসি আমাদের গান’ নামক একটি ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে আইপিডিসি ফাইন্যান্স। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত তাদের ইউটিউব চ্যানেলে ৯টি লোক গানের ট্র্যাক প্রকাশিত হয়েছে। চ্যানেলটিতে লোকসংগীতে পারদর্শী দেশের প্রতিশ্রুতিশীল ও পরীক্ষিত গায়কদের স্টুডিও-রেকর্ডেড পারফরম্যান্স রয়েছে। ফকির লালন শাহ, শাহ আবদুল করিম এবং পল্লীকবি জসিমউদ্দীনসহ একাধিক নামিদামি ব্যক্তির লেখা লোকগানের কভার ইতোমধ্যেই তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে তরুণ প্রজন্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মাঝে। চ্যানেলটি এ পর্যন্ত ভিউ পেয়েছে ১০ মিলিয়নেরও বেশি। ইউটিউব এবং ফেসবুকের বিভিন্ন চ্যানেলে ‘আইপিডিসি আমাদের গান’-এর গানগুলির মোট ভিউ ১০০ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে।

স্মারকটি গ্রহণকালে আইপিডিসি’র সিইও এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর মমিনুল ইসলাম ‘আমাদের গান’ প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে ফোক মিউজিকের মতো সংস্কৃতির শেকড় আঁকড়ে থাকা গানগুলোকে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার আকাঙ্ক্ষার কথা জানান। তিনি বলেন, “আমাদের সংস্কৃতি অত্যন্ত গৌরবময়। আমরা ‘আইপিডিসি আমাদের গান’-এর মাধ্যমে একটি উদ্যোগ নিয়েছি এই গৌরবময় সংস্কৃতিকে শৈল্পিকভাবে দেশে ও পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরার। আমি সর্বস্তরের সবাইকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাই দেশীয় সংস্কৃতিকে নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ করার জন্য। আমরা অর্থনৈতিক উন্নয়নের যে পথে আছি, জাতি হিসেবে বিশ্বমঞ্চে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সেই অগ্রযাত্রার পথে আমাদের সাংস্কৃতিক উন্নয়নের প্রচেষ্টাকেও পরিচালিত করতে হবে। আমাদের গৌরবময় সংস্কৃতিকে আমাদেরই রক্ষা করতে হবে মিলিত প্রচেষ্টায়।”

কালজয়ী বিভিন্ন লোকসঙ্গীতকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করতে সঙ্গীত পরিচালক স্থানীয় সাংস্কৃতিক ধারা ও সঙ্গীতের সমসাময়িক ট্রেন্ডগুলির এক অনবদ্য মিশ্রণ ঘটিয়েছেন মূল গানের আমেজ অক্ষুণ্ণ রেখেই। গানগুলোর সংগীতায়োজন, ঐতিহ্যবাহী এবং আধুনিক উভয় বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার এবং সেটের দারুণ নকশা শ্রোতার মনে তৈরি করে বিচিত্র এক আবহ। প্ল্যাটফর্মটি নতুনভাবে বাংলাদেশের লোকসঙ্গীতকে দেখার ও উপস্থাপন করার চেষ্টা করছে। লোকগানের ভক্ত ও সংগীত সম্পর্কে উত্সাহীরা ‘আইপিডিসি আমাদের গান’-এর চ্যানেল থেকে ঘুরে আসতে পারেন- https://www.youtube.com/channel/UC-cWD4UAwiMGqwCW7tHbv2A