মেসির হ্যাটট্রিকে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা

আজকের বাজার ডেস্ক
অবশেষে কেটে গেল শঙ্কার মেঘ। সব শঙ্কা পেছনে ফেলে রাশিয়া বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল আর্জেন্টিনা। বিশ্বকাপ মঞ্চও যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল। আর্জেন্টিনাকে ছাড়া বিশ্বকাপ, ভাবা যায় না। ঘুণাক্ষরেও কেউ চাননি তেমনটা। যদি তিনি এ চর্মগোলকের খেলাটি অল্পবিস্তর বুঝেন! স্বয়ং ফুটবলদেবতাও চাননি তা। আর চাননি বলেই লিওনেল মেসিকে পাওয়া গেল চেনা রূপে, এত নাটকীয়তায় পর আর্জেন্টিনা নিশ্চিত করল রাশিয়া বিশ্বকাপের মূল পর্ব। মেসির হ্যাটট্রিকে ইকুয়েডরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা পেয়েছে ২০১৮ সালের ফুটবল মহাযজ্ঞের টিকিট।
আর্জেন্টিনার জার্সিতে মেসি ‘অনুজ্জ্বল’। ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে আলবিসেলেস্তেদের তোলার পরও বার্সেলোনা ফরোয়ার্ডকে শুনতে হয়েছে এই অপবাদ। এমনকি ২০১৫ ও ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকায় রানার্স আপ হওয়ার পরও প্রশ্ন উঠেছে মেসির জাতীয় দলের সামর্থ্য নিয়ে। সেই সব সমালোচকদের কড়া জবাব দিলেন তিনি আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপে তুলে। একক পারফরম্যান্সে ভরিয়ে দিলেন ভক্তদের হৃদয়। আর নিজে হ্যাটট্রিক উৎসবে মেতে বিশ্বকাপে ওঠার উপলক্ষটা করলেন আরও রঙিন।
অথচ শুরুতে কী ধাক্কাটাই না খেয়েছিল আর্জেন্টিনা। কিটোর স্তাদিও অলিম্পিয়াকোর দর্শকেরা নড়েচড়ে বসারও সুযোগ পেলেন না, তার আগেই গোল। ম্যাচ ঘড়িতে সময় গড়িয়েছে মাত্র ৪০ সেকেন্ড। আর্জেন্টাইনদের মনে ওই সময়ই ছুরি বসিয়ে দেন রেনাতো ইবারা। রবের্তো ওর্দোনেসের সঙ্গে হেডে ওয়ান টু ওয়ান খেলে বাঁ প্রান্ত থেকে চমৎকার শটে বল জালে জড়ান ইবারা।
গোল শোধে খুব একটা দেরি হয়নি আর্জেন্টিনার। ১২ মিনিটে চমৎকার এক আক্রমণ থেকে আলবিসেলস্তেদের সমতায় ফেরান মেসি। ক্ষীপ্রগতিতে বল নিয়ে এগিয়ে বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড পাস দেন আনহেল দি মারিয়াকে। রিটার্ন পাসে বল পেয়ে ছোট বক্সের সামনে থেকে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি।
খানিক পর মেসির আরেকটি দুর্দান্ত চেষ্টা দারুণ দক্ষতায় প্রতিহত করেন ইকুয়েডর গোলরক্ষক। সেবার হতাশ হলেও ২০ মিনিটে আবারও গোল উৎসবে মাতেন মেসি। দি মারিয়া পাসটা ঠিকমতো দিতে না পারলেও ইকুয়েডরের এক খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বল চলে আসে মেসির কাছে। বার্সেলোনা তারকা দ্রুতগতিতে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন ডি বক্সে, এরপর দূর থেকে নিলেন জোরালো শট, একেবারে উপর জালে লাগা বলটা ধরার সাধ্য ছিল না ইকুয়েডর গোলরক্ষকের।
৩২ মিনিটে মেসির পাস বক্সের ভেতর দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলেন দি মারিয়া। যদিও ইকুয়েডর গোলরক্ষকের সঙ্গে ওয়ান টু ওয়ানে পেরে উঠেননি প্যারিস সেন্ত জার্মেই উইঙ্গার। প্রথমার্ধ শেষ হয় ওই ২-১ ব্যবধানে।
বিরতির পরও চলেছে মেসি জাদু। অসাধারণ পারফরম্যান্সে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন তিনি ৬২ মিনিটে। এনসো পেরেসের ক্রস বুক দিয়ে বল নামালেন প্রথমে মাটিতে, এরপর চারপাশটা দেখে দৌড় দিলেন বক্সের দিকে। চোখ পড়ল তার গোলপোস্টের দিকে, দেখলেন প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক এগিয়ে আছে বেশ খানিকটা। সুযোগটা আর মিস করলেন না, দারুণ এক শটে করলেন দেখার মতো গোল।