মেহেরপুরে বাড়ছে বাড়ির আঙ্গিনায় ফল সবজি ও চাষ

জেলার বসতবাড়ির আনাচে-কানাচে পতিত জমির ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে শুরু হয়েছে বাড়ির আঙ্গিনায় নিরাপদ সবজি ও ফলের চাষ। সুস্থ সবলভাবে বাঁচতে হলে পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। প্রতিজন বয়স্ক মানুষের জন্য রোজ ২১৩ গ্রাম করে সবজি খাওয়ার প্রয়োজন। কিন্তু গড়মাত্রা অর্ধেকেরও কম। এই কারণেই দেশের অধিকাংশ মানুষ দৈহিক ও মানষিক অসুখে ভুগছে। এই পুষ্টি পূরণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সবজি মডেল উদ্ভাবন হয়েছে। এরমধ্যে রেমহেরপুর জেলা একটি। এই মডেল অনুসরণ করে চার সদস্যের একটি পরিবার সারাবছর সবজি উৎপাদন করতে পারছে। এজন্য বাড়ির আঙ্গিনাতে রোদযুক্ত উঁচু মাত্র ৬ মিটার লম্বা ও ৬ মিটার চওড়া জমির প্রয়োজন।

বসতবাড়ির আনাচে-কানাচে পতিত জমির ব্যবহার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে জেলার গাংনী উপজেলার তেরাইল গ্রামের মহিলা কৃষি পাঠাগারের ১৮০ জন সদস্যকে নিয়ে গড়ে ওঠা কার্যক্রম এখন অনুকরণীয় হয়ে উঠছে জেলার অন্য গ্রামগুলোতেও।

মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কৃষি সমৃদ্ধ গ্রাম তেরাইল। দেশের প্রতি ইঞ্চি মাটি আবাদের আওতায় আনতে হবে প্রধানমন্ত্রীর এমন ঘোষণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বকুল হোসেন তেরাইল গ্রামের এ ব্লকের ১৮০ জন নারীকে নিয়ে গড়ে তোলেন মহিলা কৃষি পাঠাগার। বর্তমানে এই নারীরা গ্রামের প্রতিটি বাড়ির প্রায় ৬০ হেক্টর পতিত জমির আঙ্গিনায় উৎপাদন করছে বিষমুক্ত রঙ্গিন শাক-সবজি লাউ, করলা, শশা, মিষ্টি কুমড়া, পুঁইশাক, কলমি শাক, লালশাক, কাটুয়া ডাটা, পেঁপে, সজিনা, বেদেনা, টক জাতীয় ফল লেবু (কলম), বাতাবি লেবু (বারো মাসি), জলপাই, আমলকি চাষ হচ্ছে। এছাড়াও এ সকল সবজি উৎপাদনে ট্্রাইকো কম্পোষ্ট, এক্সক্লুসিভ সুপার কম্পোষ্ট, ভার্মি কম্পোষ্ট, জৈব নাইট্রোজেন, জৈব বালাইনাশক তৈরি ও ব্যবহার করে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

গৃহিনী পিংকি খাতুন জানান, প্রতিনিয়তো মহিলা কৃষি ক্লাবের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ নিয়ে বাড়ির আঙ্গিনায় সবজিসহ বিভিন্ন ফলের আবাদ করছি। এতে নিজের চাহিদা মিটে বাইরেও বিক্রি করে কিছু আয় হচ্ছে। গ্রামের আম্বিয়া খাতুন জানান, বাড়ির আঙ্গিনাতে কলমি শাক আবাদ করেছি। সপ্তাহে তিনদিন এই শাক সংগ্রহ করার পাশাপাশি আরও দু‘দিন বিক্রি করে অন্য সবজি কেনার টাকা আসছে। এতে করে পরিবারের সদস্যদের পুষ্টিচাহিদাও মিটছে।

গাংনী উপজেলার উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা বকুল হোসেন জানান, বাড়ির আঙ্গিনায় উৎপাদিত নিরাপদ সবজি ও ফল করোনা প্রতিরোধে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির করবে। বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি ও ফল চাষে নারীদের এমন সফলতাকে স্বাগত জানিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন মেহেরপুর-২ আসনের (গাংনী) সংসদ সদস্য মো. সাহিদুজ্জামান খোকন। তিনি মনে করেন এমন উদ্যোগ যদি জেলার প্রতিটি গ্রামে নেওয়া যায় তবে পুররুদের পাশাপাশি নারীরাও কৃষিতে অগ্রনী ভুমিকা পালন করবে। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান