মেয়ের জানাজার আগেই চোখ হারালেন সেই বাবা

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত চার বছর বয়সী তাসফিয়ার বাবা মাওলানা আবু জাহেরের ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজেই এ তথ্য নিশ্চিত করেন আবু জাহের। এর আগে, বুধবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মলকার বাপের দোকান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

শিশুটির বাবা আবু জাহের বলেন, দোকান থেকে একটি জুস ও চিপস নিয়ে বের হচ্ছিলাম। এ সময় মহিন, রিমন, আকবর, নাঈমের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একদল সন্ত্রাসী বাজারে আসে। পরে তারা আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে পাশে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারে লেগে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। দ্রুত তাসফিয়াকে নিয়ে দোকান থেকে বের হওয়ার সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের লক্ষ্য করে ইট নিক্ষেপ করে। এতে তাসফিয়ার মাথায় আঘাত লাগে।

পরে দোকানি মামুনের সহযোগিতায় আমরা বাড়ির দিকে যাওয়ার পথে পেছন থেকে আরো দুই রাউন্ড শটগানের গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এতে তাসফিয়া ও আমি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটে পড়ি। গুলিতে মাথাসহ পুরো শরীর ঝাঁঝরা হয়ে যায় তাসফিয়ার।

তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসীদের গুলিতে আমি আমার ডান চোখ হারিয়েছি। সেহরির সময় আমার মেয়ের লাশ নিয়ে ঢাকা থেকে এসেছি। আজ মাগরিবের পর জানাজা হবে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

তাসফিয়ার মা জেসমিন আক্তার বলেন, আমার সোনামণি তাসপিয়া লাশ হয়ে ফিরেছে। আমার বুকটা খালি হয়ে গেছে। মেয়ে আমারে ঘুম পাড়িয়ে যে গেল, আর আসবে না।

এদিকে, তাসফিয়া নিহতের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহিদুল হক রনি।

এর আগে, দুপুরে বেগমগঞ্জ মডেল থানায় ১৭ জনের নামে একটি হত্যা মামলা করেন নিহত তাসফিয়ার চাচা হুমায়ুন কবির। তবে মামলার গোপনীয়তার স্বার্থে আসামিদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।

ওসি মীর জাহিদুল হক রনি বলেন, ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেছেন নিহত শিশুর চাচা। আমরা তিন আসামিকে গ্রেফতার করেছি। গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খবর-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান