মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে লুটপাট হচ্ছে: ফরাসউদ্দিন

মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতিতে টাকা লেনদেনে লুটপাটের সঙ্গে তুলনা করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, অর্থ লেনদেনের এই পদ্ধতিতে ‘লুটপাট ও ডাকাতি’ হচ্ছে। নিয়ামক পরিমণ্ডল (রেগুলেটরি ফ্রেইম ওয়ার্ক) না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার ২১ নভেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের ১৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশাল মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক এ গভর্নর বলেন, বগুড়ায় আমার এক শিক্ষককে কিছু টাকা পাঠাইতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে গুণে গুণে ২ শতাংশ কেটে রেখেছে। তারপর টাকা তুলতে গেলে শিক্ষকের কাছ থেকেও টাকা কেটে নিয়েছে। এই রকম লুটপাট ও ডাকাতি করছে। যেহেতু কোনো নিয়ামক পরিমণ্ডল নেই, তাই কাউকে ধরা যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠালে শূন্য দশমিক ৫ পয়সা শতাংশ কাটা হয়। বাজার অর্থনীতিতে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুর্নীতবাজ-লুটেরারা অনেক বেশি সক্রিয় হয়েছে।কারণ হল ওই যে পরিমণ্ডল, যদি রেগুলেটরি ফ্রেইম ওয়ার্ক ছাড়া টেকনলজিক্যাল অ্যাডভান্সমেন্টে চলে যান… এই যে মোবাইল ফান্ড ট্রান্সফার, বলে মোবাইল ব্যাংকিং, আমি তীব্র ভাষায় নিন্দা করি, ধিক্কার জানাই।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সভাপতিত্বে সভায় দুই কমিশনার নাসিরউদ্দিন আহমেদ ও এএফএম আমিনুল ইসলাম, সচিব শামসুল আরেফিন সভায় বক্তব্য দেন।

বড় দুর্নীতবাজদের কাছে যেতে না পারার বিষয়টি স্বীকার করেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমদ।

তিনি বলেন, আমরা অনেক বড় দুর্নীতবাজের কাছে যেতে পারিনি। এটা আমাদের স্বীকার করতে হবে। তবে এই যে পারিনি, এটা স্বীকার করার সাহস আমাদের রয়েছে। আমরা শুরু করলে শেষ করব, মাঝপথ থেকে ফিরে আসব না।

উন্নয়ন ও দুর্নীতিকে ‘যমজ ভাই’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, রেগুলেটরি ফ্রেইম ওয়ার্কগুলো যদি ঠিক থাকে তাহলে উন্নয়ন ঠিকই হবে, অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিতভাবে কাজ করলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরা যাবে। তাহলে জনগণের উন্নয়নের জন্য যে অর্থনৈতিক উন্নতি দরকার, সেটা করা সম্ভব হবে।

এসময় তিনি জনগণকে হয়রানি না করতে কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানান।

আজকের বাজার: আরআর/ ২১ নভেম্বর ২০১৭