এমন একটা সময় ছিল, যখন যক্ষ্মার নাম শুনলেই আঁতকে উঠতো মানুষ। রোগী যেমন মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতেন, তেমনই তার ধারে কাছে ঘেঁষতেও ভয় পেত চার পাশের লোকজন। কিন্তু ধীরে ধীরে এই রোগের সঙ্গে লড়তে শিখেছে মানুষ। বর্তমানে চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়েও ফেলা যায় এই রোগ। প্রত্যেক বছর ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়।
টিবি বা যক্ষ্মা সাধারণত আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া দেশের মানুষের মধ্যে দেখা যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১১ সালে ভারতে মোট ২২ লক্ষ মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত ছিলেন।
তাই চিকিৎসায় এই রোগ সারানো গেলেও, এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা যে কমে গিয়েছে, তা কিন্তু নয়। তাই চিকিৎসার প্রশ্ন আসার আগেই নিজেদের সচেতন হওয়া জরুরি।
এই রোগে এমন কিছু উপসর্গ থাকে, যা সাধারণ মনে হয় প্রাথমিক ভাবে। কিন্তু সমস্যাগুলি যখন বাড়তে থাকে, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। তাই আগে থেকে জেনে রাখা ভাল, কিছু না মনে হলেও যে উপসর্গগুলি মৃত্যু ডেকে আনতে পারে সেগুলি কী-
• হঠাৎ রাতে ঘেমে গেলে সাবধান হোন। অনেকেই আবহাওয়ার কারণে গরম লাগছে ভেবে এড়িয়ে যান. কিন্তু নিয়মিত রাতে ঘুমনোর সময়ে ঘাম হলে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ নিন।
• শরীর খারাপ থাকলে অনেকেরই খিদে পায় না। বহু দিন ধরে খিদে না পাওয়া কিন্তু অশনি সংকেত দেয়।
• প্রায়ই বুকে ব্যথা হলে তা কখনওই ফেলে রাখবেন না। এমনকি এর পরিণতি হার্ট অ্যাটাক পর্যন্ত হতে পারে।
• সর্দি কাশি হলে কেউই সে ভাবে গুরুত্ব দেয় না। ধরে নেওয়া হয়, ঠান্ডা লেগেছে। কিন্তু অনবরত কাশি হওয়া এবং তার সঙ্গে রক্ত বেরনো টিবি-র অন্যতম উপসর্গ।
• যক্ষ্মা ধীরে ধীরে শরীরে অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের উপরেও প্রভাব ফেলতে থাকে। যেমন পিঠে ও কোমরে ব্যথা। এ ছাড়া কিডনিতেও প্রভাবে ফেলে। তাই প্রস্রাবে রক্ত পেলে অবশ্যই সাবধান হোন।
তবে টিবি এড়িয়ে চলতে গেলে যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি, তা হল সচেতনতা। কলকাতার এক সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক অমিত ঘোষ বলছেন, একদম ছোট বয়স থেকেই সচেতন থাকা উচিত।
ছোট থেকেই ঘন ঘন হজমের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা খুবই প্রয়োজন। প্রায়ই জ্বর বা কাশি লেগে থাকলে একেবারেই এড়িয়ে না যাওয়া উচিত। রোগী প্রাপ্তবয়স্ক হলে, তাঁর ব্লাড সুগার বা এইচআইভি রয়েছে কি না তা দেখে নেওয়া দরকার। কারণ এদের মধ্যে সহজে টিবিতে আক্রান্ত সম্ভাবনা থাকে।