যমুনা তীরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি

সিলেট অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে ভারি বর্ষণের সঙ্গে উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় যমুনা তীরে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। বৃষ্টি বাড়লে দেশের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

দেশের নদীগুলোর ৯০টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে শুক্রবার সাতটি পয়েন্টে পানি বিপদসীমার উপরে ছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১টি পয়েন্টে পানি বেড়েছে; কমেছে ৩২টি পয়েন্টে।

যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ, সারিয়াকান্দি, কাজীপুর, সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এসব পয়েন্টে পানির উচ্চতা শুক্রবার ৪ থেকে ৭ সেন্টিমিটার বেড়েছে।

সুরমা নদীর কানাইঘাট, সিলেট পয়েন্টে ও কুশিয়ারার সিলেট-শেরপুর, অমলশীদ ও শেওলা পয়েন্টে পানি কমেছে। কংশ নদীর জারিয়াজঞ্জাইল পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপরে বয়ে গেলেও শুক্রবার উচ্চতা আর বাড়েনি। মাতামুহুরি ও হালদায় পানি কমা অব্যাহত রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে। আর পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, উজানে বৃষ্টিপাত বাড়লে দেশের উত্তরাঞ্চলের পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার উজানে তুলনামূলক কম বৃষ্টি হয়েছে। ফলে যমুনা-বহ্মপুত্রের বিভিন্নি পয়েন্টে পানি তেমন বাড়েনি। তবে আগামী কয়েকদিন উজানে বৃষ্টি হতে পারে। এতে যমুনার পানি বৃদ্ধির ধারা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে।

অন্যদিকে শুক্রবার বহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকার নদীগুলোর পানি বাড়ার প্রবণতা দেখা গেছে। তবে সুরমা-কুশিয়ারার পানি কমছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, শনিবার রংপুর ও খুলনা বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আগামী সোমবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এ ধরনের বন্যা অস্বাভাবিক নয়। গত বছরও জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের পর তৃতীয় সপ্তাহে গিয়ে দুই দফা ভারি বর্ষণে উজানে ঢল নামে। তাতে দেশের ১৬টি জেলার ৫৯টি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়।

প্রতি বছর জুলাই-আগস্ট মাসে ভারিবর্ষণের সঙ্গে পাহাড়ি ঢলে গড়ে দেশের ২০-২৫ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয় বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য।

তবে মধ্য অগাস্ট পর্যন্ত দেশে ও উজানে ধারাবাহিক বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে যায়। গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র একসঙ্গে ফুঁসে উঠলেই বন্যা ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা থাকে।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ৮ জুলাই ২০১৭