যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দু’আসামীর ফাঁসি কার্যকর

চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলায় দু’বান্ধবীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত দু’আসামীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। ফাঁসি কার্যকর হওয়া দু’জন হলেন চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার খাসকররা ইউনিয়নের রায় লক্ষীপুর গ্রামের মিন্টু ওরফে কালু (৫০) ও একই গ্রামের আজিজ ওরফে আজিজুল (৫০)। সোমবার রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়। ফাঁসি কার্যকরের পর সিভিল সার্জন ডা: শেখ আবু শাহীন নেতৃত্বে চিকিৎসক টিম তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। ফাঁসি কার্যকরের আগে সিভিল সার্জন ডা: শেখ আবু শাহীন,অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী মো: সায়েমুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করেন।কারারীতি অনুযায়ী ফাঁসির মঞ্চে তোলার আগে দু’জনকে গোসল করানো হয়।এরপর তাদেরকে তওবা পড়ান হয়।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ফাঁসি কার্যকর হওয়া দু’জনের পোস্টমর্টেম সম্পন্ন করার পর মরদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হন্তান্তর করা হয়েছে।
যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার জোড়গাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেলা খাতুন ও তার বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষীপুর গ্রামের মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে ওই দু’নারীকে ধর্ষণ করা হয় বলে পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে।প্রতিবেদনে বলা হয়, গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধের পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে গলাকাটা হয় ওই দু’নারীকে।এ ঘটনায় নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নারগিস বেগম খুনের পর দিন আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফাঁসি কার্যকর হওয়া ওই দু’জনসহ চারজনকে আসামী করা হয়।এ মামলার অপর দু’জন হলেন একই গ্রামের সুজন ও মহি। মামলা বিচারাধীন অবস্থায় আসামী মহি মারা যান। ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল মিন্টু, আজিজ ও সুজনকে মৃত্যুদন্ড দেন। এরপর আসামীপক্ষের লোকজন হাইকোর্টে আপিল করেন। পরে ডেথ রেফারেন্স ও আসামীদের আপিল শুনানি শেষে হাইকোর্ট তা বহাল রাখেন। ২০১২ সালে ১১ নভেম্বর নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখার আদেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত মিন্টু ওরফে কালু ও আজিজ ওরফে আজিজুলের রায় বহাল রাখেন এবং অপর আসামী সুজনকে বেকসুর খালাস দেন। সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হওয়ার পর আলোচিত ধর্ষক-খুনী কালু ও আজিজুলের ফাঁসি কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ।