যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানায় ঘূর্ণিঝড় আইডার আঘাত

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য লুইজিয়ানায় স্থানীয় সময় রোববার আঘাত হেনেছে ঘূর্ণিঝড় আইডা। ঝড়ের কারনে বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়েছে নিউ অরলিন্স।
আইডা ক্যাটাগরি ফোর ঝড় হিসেবে নিউ অরলিন্সের একশ’ মাইল দক্ষিণে লুইজিয়ানা উপকূলের ফোর্ট ফরচুনে ঘণ্টায় ১১০ মাইল বেগে আঘাত হানে। সন্ধ্যার দিকে এটি ক্যাটাগরি তিন এ নেমে আসে।
ক্যাটরিনা ছিল একই ক্যাটাগরির ঝড় যা ২০০৫ সালের ২৯ আগস্ট এই রাজ্যে আঘাত হেনেছিল। ক্যাটরিনার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছিল ১৮শ’ লোক।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় আইডার আঘাতে নিউ অরলিন্সের পুরো এলাকাই অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। কেবলমাত্র জেনারেটর ব্যবহার করে শহরটিতে কিছু বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।
ঝড় আঘাত হানার আগে থেকেই নিউ অরলিন্সে তীব্র ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি হচ্ছিল।
উপকূলীয় অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন এটিকে মানুষের জীবনের জন্য হুমকি হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইতোমধ্যে লুইজিয়ানার প্রায় তিন লাখ মানুষ অন্ধকারে রয়েছে। বাইডেন সতর্ক করে বলেছেন, বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে এক সপ্তাহের বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচএস) বলছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেখানকার লোকজনকে ব্যাপক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে।
মেক্সিকো উপত্যকা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ধেয়ে আসে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আইডা। ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কায় আগেই উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
ইতিমধ্যে ওই এলাকা থেকে হাজার হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ে সরে গেছে। যারা এখনো সেখানে রয়ে গেছে তাদের ঘূর্ণিঝড় শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ জায়গায় আশ্রয় নিতে বলেছে কর্তৃপক্ষ।
শুধু লুইজিয়ানা নয়, মিসিসিপিসহ আলাবামা-ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের সীমান্ত পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা দিতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। ঝড়ের পাশাপাশি এসব অঞ্চলে হতে পারে ভারী বৃষ্টিপাতও।
মিসিসিপিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয় আগে থেকেই।
এদিকে লুইজিয়ানা গভর্ণর জন বেল এডওয়ার্ড বলেছেন, ১৮৫০ সালের পর আইডা হচ্ছে এই রাজ্যে আঘাত হানা সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়।
রোববার এক ব্রিফিংয়ে তিনি আরো বলেন, আগামী দিন ও সপ্তাহগুলো অনেক কঠিন হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
হোয়াইট হাউস বলছে, ওই এলাকায় ফেডারেল সংস্থাসমূহ দুই হাজারেরও বেশি জরুরি কর্মী মোতায়েন করেছে। এর মধ্যে ১৩টি অনুসন্ধানী ও উদ্ধারকারী দল রয়েছে।
এছাড়া স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, রেডক্রস ও অন্যান্য সংস্থাসমূহ অন্তত ১৬ হাজার লোকের জন্যে কয়েক ডজন আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।
তবে করোনার কারণে পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আশ্রয় কেন্দ্রের সকলকে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব মানার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।