প্রায় ১৫ মাস পর গাজায় যুদ্ধ বিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধা ও ইসরাইল। আগামী ১৯ জানুয়ারি থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর বর্বরতা অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার ইসরাইলি মন্ত্রিসভায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির ওপর ভোটাভুটির অনুষ্ঠিত হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নতুন করে বিমান হামলায় অন্তত সাত ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
গাজা থেকে এএফপি আজ এই খবর জানায়।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার সিভির ডিফেন্স এজেন্সি জানিয়েছে, কাতারে গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি ঘোষণার পর বুধবার রাতে ইসরাইলি বিমান হামলায় ২০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, গাজা শহরের শেখ রাদওয়ান পাড়ার একটি আবাসিক ভবনে ১২ জন নিহত এবং ২০ জন আহত হয়েছে।
এই হামলার ব্যাপারে ইসরাইলি বাহিনীর তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এছাড়া অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বোমা হামলায় পাঁচ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে পশ্চিম তীরের জেনিনে ইসরাইলি হামলায় নিহত পাঁচ জনের মরদেহ জেনিন সরকারি হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার জেনিনে ইসরাইলি বিমান হামলায় ৬ ফিলিস্তিনি নিহত হয়।
যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিশর ও যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার রাতে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জসীম আল-থানি এক সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের কথা নিশ্চিত করেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী ১৯ জানুয়ারি রোববার থেকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হবে।
চুক্তি অনুয়ায়ী প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরাইলি জিম্মিকে মুক্তি দিবে হামাস।
গাজার জনবহুল এলাকা থেকে ইসরাইলের সাথে গাজার সীমান্তের ৭শ’ মিটারের বেশি দুরে অবস্থিত এলাকা থেকে ইসরাইল তাদের বাহিনী প্রত্যাহার করবে।
ইসরাইল বেসামরিক নাগরিকদের গাজার উত্তরে নির্বিঘ্নে তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে দিবে এবং প্রতিদিন কমপক্ষে ৬শ’ ট্রাক ত্রাণ সামগ্রী প্রবেশের অনুমতি দিবে।
শর্ত পূরণ হলে চুক্তির দ্বিতীয় ধাপে ইসরাইলের কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে অবশিষ্ট সব জীবিত জিম্মিদের মুক্তি ও স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয় রয়েছে।
তৃতীয় ধাপে অবশিষ্ট মৃতদেহগুলো ফেরত দেওয়া এবং গাজা পুনর্গঠনের কাজ শুরুর কথা বলা হয়েছে। এই কাজ মিশর, কাতার ও জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হবে।