যৌন নিপীড়নের অভিযোগে জাবি ছাত্রকে পুলিশে সোপর্দ

যৌন নিপীড়নের অভিোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) এক ছাত্রকে পুলিশে সোপর্দ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নিপীড়নকারী শিক্ষার্থীর নাম শাহেদ ইসলাম ওরফে আল আমিন । সে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪২তম ব্যাচের ছাত্র এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

বুধবার প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন তাকে পুলিশে দিয়েছেন বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত সোমবার, ২ এপ্রিল সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের সামনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম ব্যাচের এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন করে ওই শিক্ষার্থী। এরপর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়েটি আল আমিনকে ফোন করে পুনরায় তার সাথে দেখা করতে বলে। রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় দেখা করতে এলে ওই ছাত্রীর সঙ্গে থাকা বিভাগের সহপাঠী এবং সিনিয়র শিক্ষার্থীরা তাকে মারধর করে প্রক্টরের কাছে দিয়ে দেয়।

ঘটনার শিকার ছাত্রীর সঙ্গে অভিযুক্ত ছাত্রের ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের তৃতীয় দিন সোমবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খালেদা জিয়া হলের সামনের মাঠে (বৃন্দাবন) তাদের দেখা হয়।

প্রক্টর অফিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় এক ছাত্রকে মারধর করা হয়। পরে প্রক্টরিয়াল বডি সেখানে উপস্থিত হয়ে আল আমিনকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে প্রক্টর অফিসে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

প্রক্টর সিকদার মো. জুলকারনাইন সাংবাদিকদের বলেন,  যেহেতু ঘটনাটি যৌন নিপীড়নের পর্যায়ে পড়ে সেহেতু এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন বিরোধী যে সেল রয়েছে তারাই দেখবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি ভঙ্গের কারণে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে পুলিশে সোপর্দ করেছে। মানহানির ভয়ে এখন পর্যন্ত ওই ছাত্রী কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। তবুও এ ঘটনায় তাকে সবরকম সহায়তা করার জন্য আমরা তৈরি আছি।

ধর্ষণ বিরোধী মিছিল
এদিকে বুধবার সকাল ১১টায় ধর্ষণ বিরোধী মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের সামন থেকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদিক্ষণ করে ব্যবসা অনুষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

মিছিল পরবর্তী সমাবেশে সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সুমাইয়া ফেরদৌসের সঞ্চালন বক্তব্য রাখেন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী অলিউর রহমান সান, সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মঈনুল রাকীব সহ ৪৭তম ব্যাচের আরও দুই শিক্ষার্থী।

এ সময় তারা অভিযুক্ত আল আমিনের উপযুক্ত বিচার সহ আজীবন বহিষ্কারেরদাবি জানান।

এর পরে বেলা ২টায় নিপীড়নের শিকার ওই ছাত্রীর সহপাঠীদের (৪৭তম ব্যাচের) অংশগ্রহণে আরও একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ্য, অভিযুক্ত আল আমিন গত বছর ৪৬তম ব্যাচের ভর্তির সময় অপেক্ষমান তালিকায় থাকা এক ছাত্রীকে ভিসি কোটায় ভর্তি করানোর প্রলোভন দেখিয়ে তার সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ভর্তি জালিয়াতির এই ঘটনায় এ বছরের ১৮ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আল আমিনকে সাময়িক বহিষ্কার করে।

নাঈম/রাসেল