রাজকন্যার পলায়ন নাটক, বিতর্কে নরেন্দ্র মোদী

সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মোহামেদ বিন রশিদ আল মাখতুমের এক কন্যা লতিফা সাগর-পথে দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, এই খবর বেশ কিছুদিন ধরেই ইউরোপ আমেরিকার বিভিন্ন সংবাদ পত্রে ছাপা হচ্ছে।

বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, এসব খবরে জানা যায়, প্রিন্সেস লতিফা তার এক বান্ধবী, যিনি ফিনল্যান্ডের নাগরিক, এবং ফরাসী একজন সাবেক গোয়েন্দার সহযোগিতায় একটি ইয়ট বা প্রমোদ তরী ভাড়া করে গোপনে ভারতে রওয়ানা হয়েছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল, ভারত থেকে তিনি বিমানে করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইবেন।

কিন্তু পশ্চিমা মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে খবর হয়, গোয়ার উপকূলের কাছে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভারতের ন্যাভাল কমান্ডোরা ইয়টটি আটক প্রিন্সেস লতিফা সহ অন্য দুজনকে দুবাই কর্তৃপক্ষের আগে তুলে দেয়। ভারতীয় কয়েকটি মিডিয়াতেও এ খবর বের হয়। ভারত সরকার বা ভারতীয় নৌবাহিনী অবশ্য এ নিয়ে কোনো মুখ খোলেনি।

ঘটনার দুমাসের পর এ সপ্তাহে প্রথম ওয়াশিংটন পোস্টের এক খবরে বলা হয়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে দুবাইয়ের রাজকন্যাকে ধরে দেশে পাঠিয়ে দেওয়ার সেই অভিযানের অনুমতি দিয়েছিলেন।

এরপর ব্রিটেনের দৈনিক টেলিগ্রাফ মঙ্গলবার তাদের এক খবরে একই দাবি করেছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বিবিসিকে বলেছেন, এ ধরণের কোনো অপারেশন ভারতের নৌ বাহিনী করেছে – এরকম কোনো কথা এখনও সরকারের কাছে কেউ তোলেনি।

প্রিন্সের লতিফার দুই বন্ধুকে কূটনৈতিক চাপের মুখে দুবাই কর্তৃপক্ষ ছেড়ে দিয়েছে, কিন্তু রাজকন্যার এখনো কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

কেন তিনি দেশ ছেড়ে পালাতে চান- তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে পালানোর আগে একটি ভিডিও রেকর্ড করেছিলেন প্রিন্সেস লতিফা।আধ ঘণ্টারও বেশি লম্বা ভিডিওটি এখন ইউটিউবে ঘুরছে। সেখানে লতিফা বলেছেন, তার বাবার আচরণ এবং পারিবারের রক্ষণশীল পরিবেশ তার একদমই ভালো লাগতো না।

তিনি দাবি করেন, তার এক বড় বোন শামসাও একই কারণে বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিল, কিন্তু পরে তাকে ধরে এনে নির্যাতন করা হচ্ছে।

পালাতে গিয়ে ধরা পড়লে তার পরিণতিও যে খুব খারাপ হবে, সেই আশঙ্কাও তিনি প্রকাশ করেন তার ঐ ভিডিওতে। বলেন, আমার বাবার প্রধান লক্ষ্য সুনাম রক্ষা। তার জন্য তিনি যে কোনো কিছু করতে পারেন। আমি বিফল হলে একমাত্র এই ভিডিওটিউ হয়তো অমার জীবন রক্ষা করতে পারবে।

এস/