রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের চয়ন একাডেমির অষ্টম শ্রেণির ছাত্র কাউসার হত্যা মামলায় সোমবার স্বামী-স্ত্রীসহ চারজনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। ঢাকাম সপ্তম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. নজরুল ইসলাম এ আদেশ দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আলতাফ হোসেন ও তার স্ত্রী ফরিদা, জামির আলী এবং মো. শাহজাহান হোসেন। আসামিদের মধ্যে জামির আলী পলাতক। অপর তিন আসামি রায় ঘোষণার সময় আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট আদালতের এপিপি হুমায়ন কবির চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
কাউসারের বাবা মো. ইব্রাহিম আলী কামরাঙ্গীরচরের জাউলাহাটিতে পরিবার নিয়ে থাকেন। ২০১২ সালের ১৬ মে সকাল থেকে ১৭ মে বিকালের যেকোনো সময় ওই এলাকার সেলুনে কাজ করা শাহজাহান ও জামির কাউসারকে অপহরণ করে। আলতাফ হোসেন ও ফরিদার বাসায় খাটের নিচে তাকে আটকে রাখা হয়। চিরকুট এবং মোবাইলের মাধ্যমে কাউসারের বাবার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ চায় তারা।
এ ঘটনায় কাউসারের পরিবার কামরাঙ্গীরচর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পরিবারের লোকজন একপর্যায়ে ১৯ মে নবাবগঞ্জে অপহরণকারীদের হাতে মুক্তিপণের টাকা তুলে দেয়। কিন্তু অপহরণকারীরা কাউসারকে ফেরত দেয়নি। পরে ২৬ মে অপহরণের মামলা করা হয়। মামলাটি পরে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। এ মামলায় প্রথমে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পায়। এরপর অপহরণকারীরা ইব্রাহিমের কাছে আরও ১ লাখ টাকা দাবি করে।
১৫ আগস্ট মো. জামিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে আলতাফ, তার স্ত্রী ফরিদা ও শাহজাহানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রায় তিন মাস পর ১৮ আগস্ট দুপুরে কাউসারের বাসার কাছে সীমানা দেয়ালঘেরা একটি জমির মাটি খুঁড়ে তার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। জিনস প্যান্ট ও গেঞ্জি দেখে কাউসারের দেহাবশেষ শনাক্ত করে তার স্বজনেরা।
অপহরণের পরদিন ১৭ মে রাতেই কাউসারকে শ্বাসরোধে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানায়, অপহরণের পরপরই চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগে কাউসারকে অচেতন করা হয়। পরদিন বিকালে চেতনা ফিরে এলে আবারও চেতনানাশক ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। রাতে সে জেগে উঠলে জামির ও ফরিদা তার পা চেপে ধরে এবং আলতাফ বুকের ওপর বসে। শাহজাহান তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মৃত্যুদণ্ড হত্যা মামলা কাউসার হত্যা মামলা ফাঁসির আদেশ। সূত্র-ইউএনবি
আজকের বাজার/আখনূর রহমান