রাজনৈতিক দলে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ

রাজনৈতিক দলের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী সদস্য রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশনকে তাগিদ দিয়েছেন নারী নেত্রীরা। যেসব রাজনৈতিক দল এ বিধানের বিরোধিতা করে, তাদের নিবন্ধন বাতিলের সুপারিশ করেছেন তারা। গতকাল ২৩ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সংলাপে অংশ নিয়ে নারী নেত্রীরা এ সুপারিশ করেন।

ইসি গঠনের পর এই প্রথম নারী নেত্রীদের সংলাপে ডাকা হয়েছে। সংলাপে ২২ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ১৩ জন নারী নেত্রী উপস্থিত ছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অন্য চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপ শেষে নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবির সাংবাদিকদের বলেন, অনেক রাজনৈতিক দল সংলাপের সময় তাদের কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী রাখার বিধানের বিরোধিতা করেছে। আমরা এর প্রতিবাদ করেছি। সংবিধানবিরোধী এ ধরনের দাবি যারা করেছে, তাদের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানিয়েছি।

তিনি বলেন, আমরা নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির দাবি করেছি। বাংলাদেশে নারীর সমান অধিকার নেই। তারা নিরাপত্তা থেকে শুরু করে চলাফেরা, রাজনৈতিক দলগুলো থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রেও সমান সুযোগ পায় না। আমরা এটি নিশ্চিত করার জন্য বলেছি। মেয়েরা উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ পায় না। এজন্য তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না। এছাড়া নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার না করার বিষয়ে কথা হয়েছে। কারণ ধর্মের ব্যবহারের ফলে নারীরা সবচেয়ে বেশি ভিকটিম হয়।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে সিইসি কেএম নুরুল হুদা দেশের উন্নয়নে নারীর অবদান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশের নারী সমাজের প্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়েই জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও অন্যান্য নির্বাচন পরিচালনা করতে চাই।

কেএম নুরুল হুদা বলেন, সরকার পরিচালনা, রাজনীতি, ব্যবসা, বিচার বিভাগ, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, এমনকি ইসিতেও নারীর অবস্থান সুসংগঠিত রয়েছে। কেননা দেশ গঠন ও পরিচালনায় নারীর অবদান গুরুত্বপূর্ণ।

সংলাপে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রিপ ট্রাস্টের নির্বাহী পরিচালক অ্যারোমা দত্ত, নারী সাংবাদিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক পারভীন সুলতানা ঝুমা, ফর ইউ ফর এভারের (ফাইফে) প্রেসিডেন্ট রেহানা সিদ্দিকী, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব উইমেন ফর সেলফ এমপাওয়ারমেন্টের (বাউশি) নির্বাহী পরিচালক মাহবুবা বেগম, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাসহুদা খাতুন শেফালী, ডিজ্যাবল্ড রিহ্যাবিলিটেশন অ্যান্ড রিসার্চ অ্যাসোসিয়েশনের (ডিআরআরএ) নির্বাহী পরিচালক ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. মালেকা বানু, নারী নেত্রী রেখা চৌধুরী, রিনা সেনগুপ্তা, মানসুরা আকতার, ফাতেমা আক্তার, নাসরিন বেগম প্রমুখ।

৩১ জুলাই সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এবং ১৬ ও ১৭ আগস্ট গণমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সংলাপে বসে ইসি। এরপর গত ২৪ আগস্ট থেকে ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ৪০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করে নির্বাচন কমিশন। গত রোববার নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গেও সংলাপ করেছে সংস্থাটি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৪ অক্টোবর ২০১৭