বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর ও বিআইবিএমের চেয়ার অধ্যাপক খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেছেন, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তরা এখন ব্যাংকিং খাতে ঢুকে পড়েছেন। উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, একটি ব্যাংক বিগত তিন বছরে তিনজন ব্যবস্থাপনা পরিচালককে পদত্যাগে বাধ্য করেছে। এরপর নয় মাস যাবৎ তারা কোনো ব্যবস্থাপনা পরিচালক খুঁজে পাচ্ছে না।
বৃহস্পতিবার ২৩ নভেম্বর রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়ামে লোন টেকওভার ইন বাংলাদেশ: ইজ ইট এ হেলদি প্রাকটিসেস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন অনুষ্ঠানে ইব্রাহিম খালেদ একথা বলেন।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমদ চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের পরিচালক (গ.উ.ক) ড. প্রশান্ত কুমার ব্যানার্জ্জি।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, এক ব্যাংক অন্য ব্যাংকের গ্রাহকের ঋণ ক্রয় বা টেকওভার (ঋণ হস্তান্তরের) করছে। ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত ৪ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকার ঋণ হস্তান্তরের ঘটনা ঘটছে। এটিকে কেন্দ্র করে ব্যাংকগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। অনেকাংশে গ্রাহকের সব ধরনের তথ্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই না করে ঋণ দেওয়া হচ্ছে, যা পরবর্তীতে খেলাপি হয়ে পড়ছে।
গোলটেবিল বৈঠকে ঋণ হস্তান্তরের ওপর গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ সোহেল মোস্তফা। চার সদস্যের গবেষক দলে আরও ছিলেন- বিআইবিএমের সহকারী অধ্যাপক ড. মো. মহব্বত হোসেন, বিআইবিএমের লেকচারার তোফায়েল আাহমেদ এবং লেকচারার রাহাত বানু।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন, পরিচালনা পর্যদের অযৌক্তিক চাপে ঋণ হস্তান্তরে ক্ষেত্রে অসুস্থ প্রতিযোগিতা চলছে। ৫ শতাংশ ব্যাংকার জানিয়েছেন, ঋণ হস্তান্তরের অদক্ষতা রয়েছে। এক সংখ্যক ব্যাংকার জানিয়েছেন, ঋণ হস্তান্তরের ক্ষেত্রে গ্রাহকের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়া হয়।
বৈঠকের প্যানেল আলোচনায় বিআইবিএমের চেয়ার অধ্যাপক খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ বলেন, দুই থেকে চার লাখ টাকা দিলে এমডি পাওয়া যাবে। কিন্তু, ব্যাংক চালানোর মতো যোগ্য লোক পাবেন না। ব্যাংকার ভালো হলে নীতিমালার দরকার নাই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি অধ্যাপক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যাংকগুলোর মধ্যে ঋণ হস্তান্তরের সময়ে সব বিষয়ে বিচার-বিশ্লেষণ করে হস্তান্তর করা উচিত। সব ধরনের যাচাই-বাছাই ছাড়া ঋণ দিলে খেলাপি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আজকের বাজার: আরআর/ ২৩ নভেম্বর ২০১৭