রাজশাহীতে ছাত্রীকে নিয়ে শিক্ষক উধাও, স্কুল থেকে বরখাস্ত

রাজশাহীর বাঘায় ছাত্রীকে নিয়ে উধাও হওয়া শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এছাড়া আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর পৃথকভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বরখাস্তকৃত ওই শিক্ষকের নাম জাকির হোসেন জুয়েল। তার বাড়ি জেলার চারঘাট উপজেলার কালুহাটি গ্রামে।

সোমবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরিত বরখাস্ত সংক্রান্ত একটি চিঠি শিক্ষক জাকির হোসেন জুয়েলের বাড়ির ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে।

জানা যায়, প্রেমের টানে গত সোমবার বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জ মুছার ঈদগা বাজার এম এইচ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে নিয়ে একই স্কুলের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক জাকির হোসেন পালিয়ে যান। পরের দিন বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে উঠে। তাৎক্ষণিক উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য স্কুল পরিচালনা কমিটির পক্ষ থেকে শিক্ষক জাকির হোসেন জুয়েলকে বহিষ্কার করা আশ্বাস দেন প্রধান শিক্ষক।

এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর সোমবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ মোল্লার সভাপতিত্বে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করা হয়েছে।

এছাড়া শিক্ষক জাকির হোসেন জুয়েলকে সাময়িক বরখাস্তের নোটিশের অনুলিপি কপি জেলা প্রশাসক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বরাবরে পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া ৫ মে মীরগঞ্জ বাজারে ঘণ্টাব্যাপী শিক্ষকের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। শিক্ষক জাকির হোসেন জুয়েল চারঘাট উপজেলার কালুহাটি গ্রামের হাসেম মাস্টারের ছেলে।

এ বিষয়ে শিক্ষক জাকির হোসেন জুয়েলের মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ফোন রিসিভ করেনি তিনি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুল মালেক বলেন, ঘটনাটি জানার পর তাৎক্ষণিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা ও শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমানকে মোবাইল ফোনে জানানো হয়। তারপর সোমবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মিটিংয়ে শিক্ষক জাকির হোসেন জুয়েলকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া সাত দিনের মধ্যে জবাব দেয়ার জন্য তার নিজ ঠিকানায় ডাকযোগে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, এ ঘটনায় বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একটি আবেদন পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, অপ্রাপ্তবয়স্ক ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে বিদ্যালয় থেকে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমার কাছে বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।

বাঘা থানার ওসি রেজাউল হাসান বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আজকের বাজার/একেএ