যুক্তরাজ্য থেকে রাশিয়ার ২৩ কূটনীতিককে বহিষ্কার করার আলোচনা বন্ধ হতে না হতেই এবার আরো ৬০ কূটনীতিককে বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার এই আদেশ দেন বলে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের সলসবারিতে সাবেক রুশ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সের্গেই স্ক্রিপাল (৬৬) ও তাঁর মেয়ে ইউলিয়ার স্ক্রিপালের (৩৩) ওপর বিষ প্রয়োগকে কেন্দ্র করে এ আদেশ দিয়েছেন ট্রাম্প।
কূটনীতিকদের বহিষ্কারের পাশাপাশি রুশ কনস্যুলেট বন্ধেরও নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বহিষ্কৃত ৬০ জন কূটনীতিকের মধ্যে ৪৮ জন রাশিয়া দূতাবাস এবং বাকি ১২ জন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘে কর্মরত আছেন। তাদের ৭ দিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ৪ মার্চ রাশিয়া সামরিকবাহিনীর ব্যবহৃত বিষাক্ত গ্যাস ব্যবহার করে এক ব্রিটিশ নাগরিক ও তার মেয়েকে হত্যার চেষ্টা করেছে। আমাদের মিত্রদেশ যুক্তরাজ্যে এই হামলা অংসখ্য নিরাপরাধ মানুষের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলেছে এবং হামলায় এক পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এদিকে জার্মানি ও ফ্রান্স চারজন করে রুশ রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে। আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশও এমন পদক্ষেপ নিতে পারে। এসব ইউরোপীয় দেশের মধ্যে রয়েছে লিথুয়ানিয়া, লাটভিয়া, এস্তোনিয়া ও চেক রিপাবলিক।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ চ্যানেল সিএনএন শুক্রবার প্রথম এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে। খবরে বলা হয়, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রথমে ট্রাম্পকে এ ধরনের পরামর্শ দেয়া হয়।
ট্রাম্পকে দেয়া পরামর্শে বলা হয়, ব্রিটেনের সলসবারিতে শহরে রুশ গুপ্তচর স্ক্রিপাল ও তার মেয়ের ওপর নার্ভ গ্যাস হামলার জের ধরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কার করতে হবে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন পদস্থ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিএনএন জানায়, গুপ্তচর হত্যা প্রচেষ্টার জের ধরে ব্রিটেন রুশ কূটনীতিক বহিষ্কারের যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তার প্রতি ওয়াশিংটনের পূর্ণ সংহতি রয়েছে।
লন্ডনের প্রতি সংহতি প্রকাশের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক আইন ও রীতিনীতি লঙ্ঘনের দায়ে রাশিয়াকে শাস্তি দেয়ার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও রুশ কূটনীতিকদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বিবেচনা করা হচ্ছে।
ব্রিটেনের সলসবারিতে শহরের একটি বেঞ্চের ওপর গত ৪ মার্চ স্ক্রিপাল ও তার ৩৩ বছর বয়সি মেয়েকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। বর্তমানে হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। ব্রিটিশ সরকার দাবি করছে, রাশিয়ায় তৈরি নার্ভ গ্যাস নোভিচক দিয়ে স্ক্রিপালের ওপর হামলা করা হয়েছে। লন্ডন সরাসরি এ ঘটনার জন্য রাশিয়াকে দায়ী করেছে।
তবে লন্ডনের এ অভিযোগকে রাশিয়া হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে। মস্কো বলছে, ব্রিটেনসহ যেসব দেশ এই গ্যাস নিয়ে গবেষণা করছে সেগুলোর কোনো একটি দেশ থেকে এনে ওই হামলা চালানো হয়ে থাকতে পারে।
এক সময় রুশ গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করতেন স্ক্রিপাল। কিন্তু ব্রিটেনের হয়ে কাজ করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। পরে গুপ্তচর বিনিময় আইনের আওতায় তিনি মুক্তি পান এবং ব্রিটেনে বসবাস শুরু করেন।
আরএম/