ইসরাইলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এক সদস্যের সঙ্গে ‘সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের’অভিযোগে করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট। আজ ১৮ মে বৃহস্পতিবার বিচারপতি মিফতাহ উদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এ এন এম বসির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর ফলে আসলাম চৌধুরীর মুক্তিতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
আদালতে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন সাকিব মাহবুব ও সানজিদ সিদ্দকী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির।
পরে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে আদালত জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। সেই রুল যথাযথ ঘোষণা (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে তার জামিন মঞ্জুর করেন আদালত। এর ফলে তার কারা মুক্তিতে আর কোন বাধা নেই। অন্যদিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একে এম মনিরুজ্জামান কবির জানান, হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।
গত ১৫ মে ঢাকা থেকে আসলামকে আটক করা হয়। পরদিন তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে নেয় পুলিশ। পরে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগে ২৬ মে গুলশান থানায় তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করেন গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক গোলাম নূরনবী।
মামলায় আসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে সন্ত্রাস, ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির ষড়যন্ত্র করত: বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় নিরাপদ নয় মর্মে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছেন। যা অখণ্ডতা, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি স্বরূপ ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
ভারতে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে মোন্দি এন সাফাদি নামে ইসরায়েলি এক ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাত ও তাদের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে নানামুখী আলোচনা তৈরি হয়। এরপরই আসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়ের করা হয়। বৈঠকের ওই ঘটনার আগেই আসলাম চৌধুরীকে বিএনপির নতুন কমিটিতে যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে মনোনীত করেন খালেদা জিয়া।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় আসলাম চৌধুরী নিন্ম আদালতে জামিনের আবেদন জানালে ২০১৬ সালের ২৩ জুন তা নাকচ হয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে আসলাম চৌধুরী হাইকোর্টে আবেদন করেন।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মেন্দি এন সাফাদি ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের একজন সদস্য এবং তার সঙ্গে বৈঠক করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন আসলাম চৌধুরী।
তবে মোন্দি এন সাফাদির দাবি, তিনি লিকুদ পার্টির সদস্য ও বর্তমান সরকারের উপমন্ত্রী এম কে আয়ুব কারার একজন সাবেক উপদেষ্টা। মেন্দি এন সাফাদি সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস নামে একটি প্রতিষ্ঠান চালান তিনি।
আর সাফাদিও বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আসলামের সঙ্গে প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে দেখা হলেও তাদের মধ্যে ‘কোনও গোপন বিষয়ে’কথা হয়নি।
অপরদিকে আসলাম দাবি করেন মেন্দি এন সাফাদি যে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির নেতা, তা তিনি সে সময় জানতেন না।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে/১৮ মে ২০১৭