রোনালদোর জোড়া গোলে মেসির বার্সার হার

সুযোগ পেলেও ঠিকঠাক কাজে লাগাতে পারলো না মেসি। তবে দুই পেনাল্টি থেকে পাওয়া দুই জোড়া গোলে ম্যাচের ব্যবধান বাড়িয়েছে রোনালদো। মাঝখানে দলকে লিড এনে দেন ম্যাকেনি। মেসি-গ্রিজম্যানদের গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়াটা আটকে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো জুভেন্টাস।

মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচটি ড্র করতে পারলেই মেসিরা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উঠতো চ্যাম্পিয়নস লিগের গ্রুপ পর্বে। তবে সেটি করতে তো পারলেনই না বরং হেরে গেলেন ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে।

জয় চাওয়া ম্যাচটিতে হেরে গিয়ে ম্যাচ জুড়ে বেশ ভালোই খেললেন লিওনেল মেসি। সুযোগ পেলেন, সুযোগ তৈরি করলেন; কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলটা আর পেলেন না। তবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর পায়ে অতটা বল দেখা গেল না, পেনাল্টি থেকে পেয়ে গেছেন দুইটি গোল।

শুরু থেকে বার্সাকে চেপে ধরেছিল জুভেন্টাস। ৯ মিনিটে রোনালদো প্রথম শট নেন লক্ষ্যে। অবশ্য তা সহজে ঠেকান স্বাগতিক গোলকিপার মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগেন। ১২ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করেন রোনালদো। বক্সের মধ্যে বল নিয়ে এগোতে থাকা পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডকে ফাউল করেন রোনাল্ড আরাউজো। গোল করার দায়িত্ব পড়ে রোনালদোর ঘাড়ে। বার্সা গোলকিপার স্টেগেন তার শট ঠেকাতে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়লেও বল মাঝখান দিয়ে জালে জড়ায়। ১৩ মিনিটে সিআরসেভেনের গোলটি ছিল বার্সার বিপক্ষে সব প্রতিযোগিতায় ২১ ম্যাচে ১৬তম।

রক্ষণভাগের ফাঁক খুঁজে বের করে হুয়ান কুয়াদ্রাদো কয়েকবার বার্সাকে কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন। এই কলম্বিয়ান মিডফিল্ডার ২০ মিনিটে সফল হন জুভেন্টাসের দ্বিতীয় গোল বানিয়ে দিতে। তার ডানপায়ে ভাসানো ক্রস থেকে দুর্দান্ত অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে স্কোর ২-০ করেন ওয়েস্টন ম্যাককেন্নি।

দুই গোল হজম করার পর বার্সা ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া ছিল। বিশেষ করে মেসি আর জুভেন্টাস গোলকিপার জিয়ানলুইজি বুফনের লড়াই জমে উঠেছিল। ২২ মিনিটে বার্সা অধিনায়কের বাঁ পায়ের জোরালো শট ঠেকান ইতালিয়ান গোলকিপার। প্রথমার্ধে আরও দুইবার মেসির প্রচেষ্টা রুখে দেন বুফন।

বিরতির পর ফিরে আবারও আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের শট লক্ষ্যে, কিন্তু আঠার মতো লেগে থাকা বুফন এবারও তাকে ব্যর্থ করেন। ৫০ মিনিটে অ্যারন রামজির শট দুর্দান্ত ডাইভে সেভ করেন টের স্টেগেন। কিন্তু বিল্ড আপের সময় ক্লেমন্ত লংলের হ্যান্ডবলের আভাস পান রেফারি। পেনাল্টি চেকআউটের পরও কোনও সমাধান না হওয়ায় তাকে মনিটর দেখতে হয়। তাতে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি এবং স্পট কিক নেন রোনালদো। এবারও টের স্টেগেনকে ভুল দিকে পাঠিয়ে বাঁ দিকে কোনাকুনি শটে গোল করেন তিনি।

৫৮ মিনিটে মেসির ফ্রি কিক থেকে দূরের পোস্ট দিয়ে আন্তোয়ান গ্রিয়েজমানের শট গোলবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ৭৬ মিনিটে জুভেন্টাস চতুর্থ গোলের উচ্ছ্বাসে মেতেছিল। কুয়াদ্রাদোর কর্নার থেকে রোনালদোর দুর্বল শট বোনুচ্চির গায়ে লেগে জালে জড়ায়। তবে বোনুচ্চি অফসাইডে থাকায় ভিএআরে গোলটি বাতিল হয়।

এই জয়ে ৬ ম্যাচে জুভেন্টাস ও বার্সার সমান ১৫ পয়েন্ট। তবে হেড টু হেড রেকর্ডে এগিয়ে থেকে ‘জি’ গ্রুপের সেরা হলো ইতালিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। এ নিয়ে ষষ্ঠবার চ্যাম্পিয়নস লিগে মুখোমুখি হয়েছিলেন মেসি-রোনালদো। ৩-০ গোলে এগিয়ে ছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। ২০১১ সালের পর ইউরোপিয়ান শীর্ষ মঞ্চে ফের দেখায় সেই ব্যবধান ৩-২ এ কমালেন রোনালদো।

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ‘এইচ’ গ্রুপ থেকে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছে আরবি লাইপজিগ। একই গ্রুপের আরেক ম্যাচে পিএসজি ও ইস্তানবুল বাসাকসেহিরের ম্যাচটি বর্ণবাদের অভিযোগে স্থগিত ছিল।