যুক্তরাজ্য রোহিঙ্গাদের জন্য আরও তিন কোটি পাউন্ড আর্থিক সহায়তা দেবে। এর আগে দেশটি রোহিঙ্গাদের জন্য ৫৯ লাখ পাউন্ড আর্থিক সহায়তা দিয়েছিল।
২৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসের চৌধুরীর সঙ্গে মতবিনিময়কালে যুক্তরাজ্যের দুইজন প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৯ সদস্যের প্রতিনিধিদল সাক্ষাতকালে এ তথ্য জানান।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড, বৈদেশিক সাহার্য বিষয়ক ডিপার্টমেন্টের প্রতিমন্ত্রী এলিস্টার বার্ট, পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ বিষয়ক দক্ষিণ এশিয়া দপ্তরের প্রধান জন ভার্গ, ঢাকাস্থ ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত কমিশনার ডেভিড এশলে, রাজনৈতিক শাখার প্রধান পলা কোরান্স, ডিএফআইডি’র রোহিঙ্গা বিষয়ক টিম লিডার প্রমুখ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ্ কামালসহ ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময়কালে উভয়ে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বিশেষত এদের খাবার ও পানীয় জলের বিতরণ, ক্যাম্পের ভেতরের শৃঙ্খলা, রেজিস্ট্রেশন, বাসস্থান ইত্যাদি নিয়ে তারা মতবিনিময় করেন। এত বিশাল সংখ্যক মানুষকে আশ্রয় দেয়ায় প্রতিমন্ত্রীদ্বয় বাংলাদেশের ভূয়সী প্রশংসা করেন ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের বন্যা ও সাইক্লোন সফলভাবে মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করায় প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলে, বাংলাদেশ রোহিঙ্গা পরিস্থিতিও সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
এ সময় ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, নিতান্ত মানবিক কারণে মায়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলোদেশ। এখনো প্রতিদিন প্রচুর রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। নির্যাতন অব্যাহত রেখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে বলে মন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন।
মন্ত্রী বলেন,মায়ানমারকে এসব নাগরিকদের দ্রুত ফেরত নিতে হবে। ফেরত না যাওয়া পর্যন্ত এসব মানুষের থাকার অবকাঠামো,স্বাস্থ্য,সেনিটেশন, পানীয় জলের ব্যবস্থাসহ সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে প্রতিনিধি দল।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় মন্ত্রী যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট ও সরকারকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখতে মন্ত্রী তাদের আহবান জানান। বাংলাদেশের রোহিঙ্গা পরিস্থিতির সুষ্ঠু সমাধানে যুক্তরাজ্যের সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেয় প্রতিনিধি দল।
এসময় প্রতিনিধিদল বিদেশি এনজিওদের ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতার প্রক্রিয়া জানতে চান। পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মতি সাপেক্ষে তাদের দ্রুত সহযোগিতার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
এ সময় তারা ক্যাম্পের ভেতর রোহিঙ্গা শিশুদের আশ্রয়, খাদ্য ও চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চান। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে খাবার বরাদ্দ, চিকিৎসার জন্য আলাদাভাবে তালিকাভুক্ত করছে বলে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করা হয়। মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই ও অপুষ্টি নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ক্যাম্প এলাকায় রোগ বিস্তারের বিষয়ে বাংলাদেশ সতর্ক আছে এবং সবাইকে প্রয়োজনীয় টিকা ও চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন প্রলম্বিত হলে তাদের ভাসানচরে স্থানান্তর করা হবে বলে মন্ত্রী মতবিনিময়কালে উল্লেখ করেন। ইতোমধ্যে ভাসানচর বাস উপযোগী করতে নৌবাহিনী কাজ করছে বলে সভায় জানানো হয়।
আজকের বাজার : এলকে/এলকে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭