মায়ানমারে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক রেডক্রসের ত্রাণ বোঝাই নৌকায় পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করেছে উগ্রপন্থী বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার প্রকাশিত খবরে বলা হয়, গতকাল বুধবার রাতে রাখাইনের রাজধানী সিতেতে রেডক্রসের কর্মীরা বিভিন্ন ত্রাণসামগ্রী নৌকায় তুলছিলেন। এ সময় রোহিঙ্গাবিরোধী শত শত বিক্ষোভকারী সেখানে হাজির হয়ে ত্রাণকর্মীদের বাধা দেয়ার চেষ্টা করেন। তাদের কারও কারও হাতে লাঠি ও রড ছিল। একপর্যায়ে পেট্রলবোমাও নিক্ষেপ করেন বিক্ষোভকারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, এসময় কয়েকজন আহত হয়। তবে রেক ক্রসের কেউ আহত হয়নি। ওই ঘটনা নিয়ে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বাড়ছে।
রাখাইন রাজ্যের সচিব টিন মং সুই বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা ভেবেছিল এই ত্রাণ শুধু ‘বাঙালি’দের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী ও মিয়ানমারের সরকারি দপ্তর থেকে জানানো হয়, খবর পেয়ে অন্তত ২০০ পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে হাজির হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা ফাঁকা গুলি ছোড়েন। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার সময় অন্তত আটজন আহত হন।
রেডক্রসের মুখপাত্র মারিয়া সিসিলিয়া গুইন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ত্রাণকর্মী কেউ আহত হননি। বিক্ষোভকারীরা ত্রাণের নৌকা পর্যন্ত এসে রেডক্রস কর্মীদের জিজ্ঞাসা করছিল, তারা কি করছেন।
এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মায়ানমারের রোহিঙ্গা সংকট অবসানে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে ‘বলিষ্ঠ ও দ্রুত’ পদক্ষেপ নেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি চৌকিতে হামলা হয়। এর জের ধরে সেখানে সহিংস অভিযান শুরু করে মিয়ানমারের সেনা ও পুলিশ। গুলি-আগুনে নিহত হয় অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা। জাতিসংঘের তথ্য মতে, ওই হামলার পর অভিযানের মুখে প্রাণভয়ে প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশে প্রায় ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। তবে দাতা সংস্থার কর্মীরা বলছেন, এখনো অনেক রোহিঙ্গা ভয়ে সেখানে আত্মগোপন করে আছেন। তাদের কাছে কোনো খাবার বা বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নেই। খাদ্যসংকটে পড়েছে তারা। প্রাণভয়ে বাইরে বের হচ্ছে না এসব রোহিঙ্গা।
আজকের বাজার : এলকে/এলকে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭