রোহিঙ্গারা সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তা পাচ্ছে

মায়ানমারে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হেসেন চৌধুরী মায়া।

২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সর্বশেষ রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী বলেন, গত ২৫ দিনে মায়ানমার থেকে সোয়া চার লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আন্তর্জাতিক সাহায্যে তাদের সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তা দেওয়ার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ। কুতুপালং ক্যাম্পের পাশে নতুন ক্যাম্প স্থাপন করে তাদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, কক্সবাজারের ৩৩ হাজার ৫৪২ জন নিবন্ধিত রোহিঙ্গা দীর্ঘদিন বসবাস করছেন। গত ২৫ বছর ধরে এই নিবন্ধিত শরণার্থীদের কার্যক্রম ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপি এর সহায়তায় বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধান করে আসছে।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অনিবন্ধিত মিয়ানমারের রোহিঙ্গার সংখ্যা চার লাখ ২৪ হাজার। এ পর্যন্ত বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫৭৫ জন।

মন্ত্রী বলেন, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আমরা মায়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছি। অতি দ্রুত মায়ানমার তার নাগরিকদের ফেরত নেবে এইটাই আমাদের প্রত্যাশা। রোহিঙ্গা সমস্যার সুষ্ঠু সমাধানের জন্য কূটনৈতিক পর্যায়ে সব ধরনের যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছি।

তিনি বলেন, বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) আগামী চার মাস চার লাখ পরিবারের খাবার সহায়তা করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) খাদ্য, চিকিৎসা, আশ্রয়সহ সার্বিক সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করেছে

মন্ত্রী জানান, ক্যাম্পে যোগাযোগের জন্য নতুন রাস্তা নির্মাণ, চট্টগ্রাম থেকে ত্রাণ সামগ্রী গ্রহণ করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কাছে পৌঁছে দিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সুষ্ঠুভাবে ত্রাণ বিতরণের পুলিশ ও বিজিবি কাজ করছে।

কুতুপালং এলাকায় প্রায় দুই হাজার একর জায়গায় ১৪ হাজার শেড নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ত্রাণ বিতরণ সুষ্ঠু করতে ১৩টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছ বলে জানান তিনি ।

মায়া জানান, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রতিদিন ১৪ হাজার ইউনিট খাবার পানি সরবরাহ করছে এবং ১০০ টিউবঅয়েল স্থান ও ৫০০ অস্থায়ী টয়লেট নির্মাণ করেছে। এছাড়া দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ৮ ঘণ্টায় ৬৪ হাজার লিটার খাবার পানি সরবরাহ করতে পারে এমন চারটি মোবাইল ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট কাজ শুরু করেছে।

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো সমন্বয় করে কাজ করবে। আশা করছি, যতদিন প্রয়োজন তারা সাহায্য দেবে। না খেয়ে কেউ মারা যায়নি, এটাই বাংলাদেশের সাফল্য।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭