দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের আহবান জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী এবং প্রবীণ আইনজীবী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটে এক সমাবেশে তারা এ ঐক্যের আহবান জানান। রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের প্রতিবাদ ও সমস্যার স্থায়ী সমাধানে জাতীয় ঐক্যের দাবিতে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও কামাল হোসেনের আমন্ত্রণে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের জনগণ একতাবদ্ধ, বিশ্ববাসীর কাছে বিষয়টি তুলে ধরতে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে দেশের বিভাগীয় শহরগুলোতে বড় সমাবেশ করার আহবান জানান বক্তারা। এছাড়া কক্সবাজারেও এ সংক্রান্ত একটি সমাবেশ করতে চান তারা।
এ ব্যাপারে বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, ‘শুধুমাত্র রোহিঙ্গা ইস্যুতে সব রাজনৈতিক দলকে আমরা আমন্ত্রণ জানাবো। চলুন পাঁচটি বড় বড় শহরে সমাবেশ করি। এরপর কক্সবাজারে সমাবেশ করি। এজন্য যে বাংলাদেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের পাশে আছে, একটি ইস্যুতে বাংলাদেশের মানুষ একত্র হবে।’
সমাবেশে তিনি বলেন, ‘এটা আন্তর্জাতিক রাজনীতির সাথে জড়িত। মিয়ানমারে চীন, রাশিয়া, ভারত ও ইসরাইল অস্ত্র বিক্রি করছে। এখানে তাদের স্বার্থ রয়েছে। তবে এই সমস্যা সমাধানে চীন, রাশিয়া ও ভারতকে আমাদের বুঝাতেই হবে। একইসঙ্গে মিয়ানমারকেও আমাদের বুঝাতে হবে। তাদের যারা সমর্থক তাদেরকেও বুঝাতে হবে।’
রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের জাতীয় জীবনে বিরাট সমস্যা উল্লেখ করে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সূ চির সংবর্ধনা বন্ধ করে দেয়ায় যুক্তরাজ্যকে ধন্যবাদ জানান তিনি। কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী জাতীয় ঐক্যের এ আহবানে সমর্থন জানিয়েছেন।
কাদের সিদ্দিকী তার বক্তব্যে বলেন, মিয়ানমারে যখন রোহিঙ্গা গণহত্যা চলছে, তখন কি কেউ সেখানে খাদ্য কিনতে যায়? বুদ্ধি-বিবেচনাহীন এই ব্যক্তি শেখ হাসিনার মন্ত্রী থাকতে পারে না। শেখ হাসিনাকে বলছি আপনি তাকে বাদ দিন।
সমাবেশে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কাছে যা কিছু বলেছেন, তা যথার্থই বলেছেন। ওই কথা বলার কারণে আমেরিকা এতটা নমনীয় হয়েছে বলে আমার বিশ্বাস। জননেত্রী আপনি দেশে এসে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিন। এই সুযোগ আর পাবেন না। আপনি আন্তর্জাতিক নেতার মতো পদক্ষেপ নিন।
রোহিঙ্গাদের ওপর অমানবিক অত্যাচারকে গুরুতর অপরাধ উল্লেখ করে সমাবেশে ড. কামাল বলেন, ‘এটা সরাসরি আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী। এটা মহাঅন্যায়। এটা যে মানবতাবিরোধী অপরাধ তাতে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।’
ড. কামাল বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে চীন ও রাশিয়ায় বিশেষ দূত পাঠানো হবে। রাশিয়া যেদিন বলেছিল রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, ঠিক তার পরদিনই দূত পাঠালে ভাল হতো। সাত দিন হয়ে গেল, সাত দিন কেন সাত ঘণ্টাও দেরি করা ঠিক হয়নি। এর স্থায়ী সমাধান করার জন্য আমাদের যা যা করার দরকার তাই করতে হবে। আমরা কারো ডাকের অপেক্ষায় নেই।’
সমাবেশে বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক দীলারা চৌধুরী, ফরওয়ার্ড পার্টির চেয়ারম্যান আ ন ম মোস্তফা আমিন প্রমুখ বক্তব্য দেন।
আজকের বাজার : এমএম / ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭