দেশের জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐকমত্য সৃষ্টিতে বিএনপির আন্তরিকতার প্রমাণ মিলছে না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
১৬ সে্প্টেম্বর শনিবার বিকালে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদলের আসন্ন চীন সফর নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক অনুষ্ঠানে অভিযোগ করেন, সরকার রোহিঙ্গা ইস্যুতে দেশে বিভক্তি সৃষ্টি করছে। এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিভক্তি সৃষ্টি করছে বিএনপি। তারা ২০ দিন পরে ত্রাণ নিয়ে কক্সবাজার গেল। ত্রাণের ট্রাক সাজিয়ে মিডিয়াকে কল করেছে। মিডিয়াকে নিয়ে তারা ওই (কক্সবাজার) দিকে যাবেন, কিন্তু কোনো নিয়ম মানবেন না। তারা তো প্রশাসনের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সারা দুনিয়ায় শেখ হাসিনার প্রশংসা দেখে, তাদের গাত্রদাহ হচ্ছে। সারা দুনিয়া বলে এক কথা, আর বিএনপি বলে আরেক কথা।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা করতে বিএনপির সদিচ্ছা বা আন্তরিকতা আছে, এমন প্রমাণ আমরা এ পর্যন্ত পাচ্ছি না। তারা এ সমস্যাকে জাতীয় স্বার্থের দিক থেকে বিবেচনা করে এ সমস্যা সমাধানে কতটা আন্তরিক সেটা আগে দেখতে হবে।
রোহিঙ্গাদের ত্রাণ দিতে কাউকে বাধা দেয়া হচ্ছে না দাবি করে কাদের বলেন, বিএনপি ত্রাণ প্রদানে নিয়ম মেনে গেলে কোনো বাধা দেয়া হবে না।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিএনপির চেয়ারপারসনের সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন লন্ডনে বসে কয়েকটি দেশের কাছে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন রোহিঙ্গা নিয়ে। তিনি লন্ডনে বসে কথা বলছেন কিন্তু দেশে আসার তারিখ বারবার পরিবর্তন করছেন। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান যদি জাতীয় সমস্যা বিবেচনা করেন, দেশে থেকে সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখবেন না? তিনি বিদেশে বসে কথা বলছেন, যেখানে দেশের বাস্তবতা তিনি বুঝতে পারছেন না। জাতীয় স্বার্থে আমরা সবার সহযোগিতা চাই।’
আওয়ামী লীগের প্রতিনিধিদলের চীন সফরে রোহিঙ্গা নিয়ে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইলে কাদের বলেন, যে বিষয়ে আলোচনা জাতিসংঘে হচ্ছে সেই আলোচনা তো এখানে অবশ্যই আসবে। আর চীন বিষয়টি অস্বীকারও করেনি। তার প্রমাণ হলো জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গা ইস্যুতে সর্বসম্মতভাবে বিবৃতি দিয়েছে।
মায়ানমারকে রাশিয়ার সমর্থনের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘রাশিয়ার বিবৃতি নিয়ে শেষ কথা বলার এখনো সময় আসেনি। রাশিয়া ইন্টারফেয়ারের কথা বলেছে। আমি আমার দেশে কারো ইন্টারফেয়ার চাইব?’
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে মন্তব্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকেও প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দেয়ার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্র সফর যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ডেকেছেন। তিনি সবাইকে নিয়ে ঘণ্টাখানেক বৈঠক করেছেন।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল ফারুক খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মণি, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শাম্মী আহমেদ, আফজাল হোসেন, অসীম কুমার উকিল, দেলোয়ার হোসেন, শ ম রেজাউল করিম, শামসুন্নাহার চাঁপা, বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য দীপঙ্কর তালুকদার, নজিবুল্লাহ হিরু, রিয়াজুল কবির কাওছার, উপাধ্যক্ষ রেমণ্ড আরেং আরো অনেকে।
আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭