রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমারকে চাপ দিন: শেখ হাসিনা

মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের দুর্ভোগ অবসানে দেশটির সরকারের উপর চাপ অব্যাহত রাখতে মুসলিম দেশগুলোর সক্রিয়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ শনিবার সকালে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৪৫তম সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। সকাল ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই সম্মেলন শুরু হয়। দুদিনব্যাপী এ সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলীকে এক বছরের জন্য ওআইসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।

সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) নিপীড়িত মানবতার পাশে দাঁড়ানোর জন্য নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। কাজেই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি ওআইসি তখন নিশ্চুপ থাকতে পারে না। ওআইসিকে অবশ্যই মিয়ানমার সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখতে হবে, যাতে মিয়ানমার বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতা অনুযায়ী তাদের অধিবাসী রোহিঙ্গাদের দেশে নিরাপদে ফেরত নিয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীও আমাদের সবার মতো মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার এবং জীবন-জীবিকার অধিকার রাখে।নিপীড়িত মানবতার জন্য আমরা আমাদের চিত্ত ও সীমান্ত দুই-ই উন্মুক্ত করে দিয়েছি। মিয়ানমারের প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের ব্যথায় ব্যথিত। কারণ, আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ পরিবারের ১৮জন সদস্য নির্মমভাবে নিহত হওয়ার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে ছয় বছর দেশে ফিরতে পারিনি, উদ্বাস্তু হিসেবে বিদেশের মাটিতে কাটিয়েছি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড, রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল লিওনিদোভিচ বাগানোভওসহ সংস্থার সদস্যরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিনিধিরা উপস্থিত রয়েছেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য— ‘টেকসই শান্তি, সংহতি ও উন্নয়নে ইসলামিক মূল্যবোধ’।

ওআইসিভুক্ত ৫৭টি দেশের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই সম্মেলনে (সিএফএম) যোগ দিয়েছেন। এবারের সিএফএম সম্মেলনে সব রাষ্ট্র, পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র, ওআইসি প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানসহ ছয় শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ৪০ জন মন্ত্রী ও সহকারী মন্ত্রী।

উল্লেখ, বাংলাদেশ ২৫ বছর পর ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনের আয়োজন করেছে। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে তৎকালীন এরশাদ সরকারের সময়ে ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ১৪তম সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এস/