রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি জোরালো সমর্থন জানিয়েছে জার্মানি, সুইডেন এবং ইউরোপিয় ইউনিয়ন (ইইউ)। বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী লাখো রোহিঙ্গার প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহান মানবিক ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেন তারা।
গতকাল ১৯ নভেম্বর রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী সিগমার গ্যাব্রিয়েল, সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গট ওয়ালস্টর্ম এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল ও ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রেডেরিকা মঘারনিন পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এসে এই সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগত অতিথিদের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যার নানা দিক সম্পর্কে আলোচনা করেন। দীর্ঘসময় ধরে তাদের (রোহিঙ্গা) আশ্রয় প্রদান বাংলাদেশের জন্য একটি সমস্যা।
তিনি আরও বলেন, জার্মান এবং সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একই সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিবৃন্দ পৃথক বৈঠকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চলমান গণহত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
প্রেস সচিব ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিবৃন্দকে উদ্বৃত করে জানান, তারা প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমরা আপনার (শেখ হাসিনা) প্রজ্ঞা এবং মানবিক উদ্যোগের প্রতি সম্মান জানাই।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ফ্রেডেরিকা মঘারনিন বলেন, মায়ানমারে অনুষ্ঠিতব্য আসেম বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয় নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের মায়ানমারের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান বাংলাদেশ সরকারকে ইউরোপিয় ইউনিয়ন তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।
সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গট ওয়ালস্টর্ম বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বাংলাদেশ থেকে স্বদেশে প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বিশ্ববাসী মায়ানমারের নেত্রী অং সান সুচি’র আরো বাস্তবসম্মত ভূমিকা প্রত্যাশা করে।
এসব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদে, নিরাপত্তা দিয়ে এবং মর্যাদা নিশ্চিত করে মায়ানমারে পুনর্বাসনে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানের বিষয়টিতেও সুইডেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালস্টর্ম প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুটিকে বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের নিরাপদ সুপেয় পানি এবং স্যানিটেশনের বন্দোবস্ত করেছে।
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে কফি আনান কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়নের আহবানের পুনরুল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাদের (মায়ানমারকে) নাগরিকদের অবশ্যই ফেরত নিতে হবে।
বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক, বেলজিয়ামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন এবং সুইডেনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২০ নভেম্বর ২০১৭