রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিকীকরণে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে: রাষ্ট্রদূত

গত বছরের মতো ২০২০ সালেও রোহিঙ্গা ইস্যু আন্তর্জাতিকীকরণে প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তিনি বলেন, ‘গত বছরের মতো এবছরেও রোহিঙ্গা ইস্যুটির আন্তর্জাতিকীকরণে আমাদের নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। আমরা চেষ্টা চালাবো জাতিসংঘের বিভিন্ন আলোচনায় বিষয়টি আরও জোরালোভাবে নিয়ে আসতে এবং এর পক্ষে বিশ্ব জনমত আরও সুসংহত করতে। এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সম্পৃক্ততা যেন অব্যাহত থাকে এবং বাড়ে সেজন্য আমাদের সার্বিক প্রচেষ্টা চলবে।’

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন জানায়, বুধবার নিউইয়র্কে স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে রাষ্ট্রদূত এসব কথা বলেন। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে এবং বিচক্ষণ কূটনৈতিক প্রজ্ঞায় জাতিসংঘের সাথে বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনিষ্ট সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। এই ঘনিষ্ট সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোর আরও সাফল্যের সাথে জাতিসংঘে তুলে ধরতে স্থায়ী মিশন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

তার বক্তব্যে উঠে আসে ৭৪তম জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ, রোহিঙ্গা ইস্যু, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম, জাতিসংঘ নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশ বিষয়ে সচেতন রাখা, বিভিন্ন রেজুলেশনে সহযোগী ও সমন্বয়কের ভূমিকা পালন, নির্বাচনে বিজয়, শান্তির সংস্কৃতি রেজ্যুলেশন গ্রহন, জাতিসংঘের তহলবিল ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, নিরাপত্তা পরিষদে সম্পৃক্ততা, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিকীকরণ, জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো শোক দিবস পালন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন, গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস্ প্লাটফর্মকে এগিয়ে নেওয়া ও কোমল কূটনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ২০১৯ সালে জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও সফলতার বিভিন্ন দিক।

এসকল অংশগ্রহণ ও অর্জিত সাফল্যের বিষয়গুলো সহজভাবে সারাবছর প্রবাসী বাঙালিসহ দেশের জনগণের মাঝে সংবাদের মাধ্যমে উপস্থাপনের জন্য সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানান স্থায়ী প্রতিনিধি। যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অর্থাৎ মুজিব বর্ষ উদযাপনের বিভিন্ন পরিকল্পনাসহ ২০২০-এ জাতিসংঘে বাংলাদেশের যে সকল বিষয় বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে এবং যেসকল চ্যালেঞ্জ রয়েছে সে সমন্ধে আলোকপাত করেন রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।

মুজিব বর্ষ উদযাপন সম্পর্কে রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালনের অংশ হিসেবে মিশনের পক্ষ হতে আমরা বছরব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করবো। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে এসকল অনুষ্ঠানকে যথাসম্ভব জাতিসংঘে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে জাতির পিতার আদর্শ বিশ্বপরিমন্ডলে আরও ভালভাবে ছড়িয়ে এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতার পাশাপাশি একজন বিশ্বনেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর পরিচিতিকে জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্রসমূহের কাছে তুলে ধরা।’

অত্যন্ত আন্তরিকতাপূর্ণ এই শুভেচ্ছা ও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা রোহিঙ্গা ইস্যু, মুজিব বর্ষ উদযাপন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রম ও এসডিজি বাস্তবায়নসহ জাতিসংঘে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করেন। অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের মুজিব বর্ষের লোগো সম্বলিত একটি মগ ও স্থায়ী মিশন প্রকাশিত ২০১৯ সালের বার্ষিক প্রকাশনা প্রদান করা হয় এবং বাংলাদেশি খাবারে আপ্যায়ন করা হয়। সূত্র-ইউএনবি

আজকের বাজার/আখনূর রহমান