রোহিঙ্গা নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ জ্ঞান নেই: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রণ জ্ঞান নেই। মায়ানমারে তারা কোনো ধরনের স্বাস্থ্যসেবা পেত না। তারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।

২১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান।

এ সময় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের,বিএমএ সভাপতি ডা. মুস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, স্বাধীনতা চিকিৎসা পরিষদ,স্বাচিপ সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান, বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী মোস্তফা সারোয়ার উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রশিক্ষিত নার্স ও মিডওয়াইফারদের হাতে ১৭৩টি নরমাল ডেলিভারির মাধ্যম রোহিঙ্গা শিশু জন্ম নিয়েছে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ১৬ থেকে ১৮ হাজার গর্ভবতী নারী আছে। উখিয়া ও টেকনাফে ৬টি কেন্দ্রে ২৪ ঘণ্টা সন্তান প্রসবের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মীদের দিয়ে রোহিঙ্গাদের ৮/১০ প্রকার ওষুধ, নারীদের মধ্যে কনডম, খাবার বড়ি ও ৩ মাসমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি ৪০টি সংস্থা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে কাজ করছে। এর মধ্যে সরকারের মন্ত্রণালয়/বিভাগ/প্রতিষ্ঠান ৮টি, আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা ১৪টি, স্থানীয় বেসরকারি সংস্থা ১৯টি, জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট ৭টি সংস্থা কাজ করছে।

তিনি বলেন, শরণার্থীদের জন্য নবনির্মিত আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১২টি স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে, যেগুলোর প্রত্যেকটি কেন্দ্রে পরিদর্শকসহ চিকিৎসক, নার্স, ধাত্রী ও প্যারামেডিক থাকবে।

মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য উখিয়া ও টেকনাফের ৫০ শয্যার হাসপাতালে আরও ৫০টি করে অস্থায়ী শয্যা বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এএইচএম এনায়েত হোসেন বলেন, প্রায় এক মাস গুলিবিদ্ধ ও ধারালো অস্ত্রের ক্ষতসহ নানাভাবে আঘাত পাওয়া ২ হাজার ৩৬৪ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ডায়রিয়ায় ৩ হাজার ৫২০ জন, চর্মরোগে ২ হাজার ৩৩৫ জন ও শ্বাসনালীর সংক্রমণে আক্রান্ত ৭ হাজার ৯৬৯ জন রোহিঙ্গা চিকিৎসা নিয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রোহিঙ্গাদের মধ্যে একজন হামের রোগী ছাড়া টিকাজনিত কোনো রোগী পাওয়া যায়নি। কোনো পোলিও রোগীরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। ম্যালেরিয়া, টাইফায়েড, ফাইলেরিয়া, জন্ডিস, কলেরা, এইচআইভি ও টিবি রোগ সনাক্ত, প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু হয়েছে।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৭