এগারতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ চলমান। এর ধারাবাহিকতায় আগামী ১৫ অক্টোবর বিকেলে বিএনপির সাথে সংলাপে বসবে নির্বাচন কমিশন। শারীরিক অসুস্থ থাকায় তিনি লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার অনুপস্থিতেই ইসির সঙ্গে সংলাপে বসবে দলটি। তবে পরোক্ষভাবে দলীয় প্রধানের অংশগ্রহণ থাকবে ওই সংলাপে। সংলাপের বিষয়ে লন্ডন থেকে মুঠোফোনে পরামর্শ দিচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া।
বিএনপির পক্ষ থেকে একটি প্রতিনিধিত্বকারী দল এই সংলাপে অংশ নেবে। এই প্রতিনিধিত্বকারী দলে কে নেতৃত্ব দেবেন বা কতজনের সদস্য যাবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন নেত্রী নিজেই।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে ক প্রস্তাবনা দেয়া হবে এ নিয়ে এর আগে ২০ দলীয় জোটের বৈঠক হয়েছে। জোটের পক্ষ থেকে একই রকমের প্রস্তাবনা দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সুষ্ঠুভাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে দিতে এরই মধ্যে বিএনপি যেসব প্রস্তাব তৈরি করেছে তার মধ্যে রয়েছে নির্বাচন কমিশনকে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ থেকে দায়িত্ব পালন করা, নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা, সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ অর্থাৎ অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেভাবে হয়েছে সেভাবে সীমানা নির্ধারণ করা, সবার জন্য সমান সুযোগ অর্থাৎ লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা, নির্বাচনকালে সেনা মোতায়েন করা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে নিরপেক্ষ রাখা, নির্বাচনের অন্তত এক মাস আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের সব স্তরে রদবদল করা, আরপিও (গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ) সংশোধন, প্রিসাইডিং অফিসারসহ ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনরত সব কর্মকর্তাকে নির্ভয়ে দায়িত্ব পালনের নিশ্চয়তা প্রদান, ভোটকেন্দ্রে সব প্রার্থীর এজেন্টের উপস্থিতি নিশ্চিত করা, দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে অবাধ সুযোগ রাখা, রাজনৈতিক দলের নেতাদের মামলার নামে হয়রানি না করা।
চোখের এবং পায়ের চিকিৎসার জন্য গত ১৫ জুলাই লন্ডনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে যান চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া কবে দেশে ফিরবেন সে ব্যাপারে সঠিক কোনো তথ্য দলটির সিনিয়র নেতাদের কাছেও নেই। যেহেতু আগামী ১৫ অক্টোবরের আগে তার দেশে ফেরার সম্ভাবনা নেই সুতরাং তার অনুপস্থিতিতেই ইসি’র সংলাপে যাবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির সিনিয়র নেতারা। তবে এ বিষয়ে বেগম জিয়ার সঙ্গে সবরকম যোগাযোগ করেই সব সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচন কমিশনের এই সংলাপকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না বিএনপি। বিএনপি নিজেকে একটি গণতান্ত্রিক দল দাবি করে। সেই লক্ষে গণতান্ত্রিক পন্থায় সকল নিয়ম কানুনকেই অনুসরণ করতে চায় দলটি। তারই অংশ হিসেবে ইসি’র সংলাপে অংশ নেবে। তবে তারা মনে করছেন, এই সংলাপ তেমন আশানরূপ সমাধান দিতে পারবে না।
নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিএনপির সংলাপ নিয়ে দলটির ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদু বলেন, নির্বাচন কমিশনকে দেয়া প্রধান প্রস্তাবনায় থাকবে একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, সবাই যাতে স্বাচ্ছন্দে নির্বাচন করতে পারে। যদিও এ নির্বাচন কমিশন আলোচনা করছেন, কিন্তু তিনি আলোচনার আগেই বলে দিয়েছেন নির্বাচনের তিন মাস আগে তারা উদ্যোগ নেবেন। তবে এই সংলাপ করে লাভ কি?
আজকের বাজার: আরআর/ ০৭ অক্টোবর ২০১৭