লিগ্যাল এইডে আইনগত সহায়তা প্রদানকারী ১,৩৪৫ জনকে দক্ষতাবৃদ্ধির প্রশিক্ষণ

সরকারি খরচায় আইনি সহায়তার (লিগ্যাল এইড) সংস্থা জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার ১,৩৪৫ জনকে দক্ষতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে সমসাময়িক বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বরে আয়োজিত সংস্থার বিভিন্ন কর্মশালায় এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনগত সহায়তাকারীদের দক্ষতাবৃদ্ধিতে সমসাময়িক বিষয়ে সংস্থার কর্মকর্তা কর্মচারি ও প্যানেল আইনজীবীদেও জন্যে এই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। প্রশিক্ষণ গ্রহণকারীদের মধ্যে সংস্থার কর্মকর্তা ৪৪৯ জন, কর্মচারি ৪১৬ জন এবং প্যানেল আইনজীবী ছিলেন ৪৮০ জন। ২০২১ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার (লিগ্যাল এইড) মাধ্যমে ৫৬ হাজার ৮৭৭ জন সরকারি খরচায় আইনি সহায়তা পেয়েছেন।

এদিকে, সুপ্রিমকোর্টের সরকারি আইন সহায়তা কার্যক্রমের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে বেঞ্চ অফিসার, বেঞ্চ রিডার ও সেকশন সুপারদের নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মশালা আয়োজন করা হয়। গত ১৩ এপ্রিল সুপ্রিমকোর্ট অডিটোরিয়ামে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। এছাড়াও সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতিগণ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।

জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর এই ছয় মাসে গরীব ও অসহায় ৫৬ হাজার ৮৭৭ জন সরকারি খরচায় আইনি সহায়তা পেয়েছেন। এই সময়ে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্ধারিত হটলাইন কলসেন্টার ১৬৪৩০ নম্বরে (টোল ফ্রি) ১২ হাজার ৭৯৭ জন বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পেয়েছেন। করোনা সংকটেও জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার অধীনে আর্থিকভাবে অসচ্ছল বিচারপ্রার্থীদের সারাদেশের আদালতসমূহে আইনি সহায়তা অব্যাহত ছিল। করোনার এই প্রাদুর্ভাবের কারণে আইন সহায়তা প্রত্যাশীরা অফিসের নির্ধারিত নাম্বারে যোগাযোগ করলেই আইনি পরামর্শ পেয়েছেন। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নির্ধারিত হটলাইন নাম্বার ১৬৪৩০ নম্বরে (টোল ফ্রি) আইনি সেবা অব্যাহত রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগনকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ প্রণয়ন করে। ২০০০ সালে আইনটি প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার। তারপরের সরকারগুলো আইনটি কার্যকরে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্টিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ দরিদ্র ও অসচ্ছল জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিত আইনটি কার্যকর করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। ২০০০ সালে প্রণীত আইন অনুযায়ী ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ গঠন করা হয়।

রাজধানীর ১৪৫, নিউ বেইলী রোডে এ সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এর ব্যাপ্তি সুপ্রিমকোর্ট, দেশের সকল জেলা, অধঃস্তন আদালত, শ্রম আদালত, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এখন প্রতিষ্ঠিত। জেলা কমিটি গঠন, প্রতিটি জেলা জজ আদালতে এর কার্যালয় রয়েছে। নানা প্রচার, প্রচরণা, সেমিনার-কর্মশালা ও প্রকল্পের মধ্য দিয়ে এ সেবা এখন মানুষের দোড়গোড়ায়। তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন এ সেবাকে আরো সহজ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। এ ওয়েবসাইটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান বিষয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য জানা যায়। খবর-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান