যে কোনো খ্রিষ্টান ছিল আমাদের শত্রু, যে কোনো মুসলমান ছিল আমাদের শত্রু। এ কথাগুলো হচ্ছিল লেবাননের দুজন ব্যক্তির মধ্যে। একসময় যারা একে অপরের চরম শত্রু ছিল। লেবাননের গৃহযুদ্ধের সময় তাদের মত এমন অনেকে ছিলেন যারা ধর্ম, বর্ণ যেকোনো ইস্যুতেই একমত হতে পারতেন না। খবর বিবিসি অনলাইনের।

ফলে চলেছে দীর্ঘদিনের গৃহযুদ্ধ। ৪০ বছর আগে এন্টন এবং বাদরি এমন অবস্থায় ছিলেন যখন তারা একে অপরকে খুঁজে বেড়াতেন হত্যা করার জন্য। ১৯৭৫ সালে লেবাননে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। যেটা স্থায়ী হয় প্রায় ১৫ বছর। সেই যুদ্ধে লেবানন একেবারে ভেঙ্গে পড়ে।

যুদ্ধের একটি পক্ষে ছিল মুসলিম অপরটিতে খ্রিষ্টান মিলিশিয়ারা। এছাড়া ডানপন্থী এবং বামপন্থীদের মধ্যেও লেগেছিল এ যুদ্ধ।

এন্টন মোকারজেল নামের লেবাননের এই খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী বলছিলেন, আমার বয়স তখন ছিল ১৯ বছর। যখন আমি প্রথমবারের মতো অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছিলাম। অন্য আরও অনেকের মত আমি মনে করেছিলাম, নিজেকে এবং আমার সম্প্রদায় রক্ষা করবো।

তিনি বলেন, সমস্ত খ্রিষ্টান সম্প্রদায় প্রথমবারের মত একত্রিত হয়েছিল। বাদরি আবু দিয়াব-দ্রুজ সম্প্রদায়ের। তিনি একটা সুরঙ্গ দেখিয়ে বলছিলেন, সেখানে তারা অস্ত্র জমা রাখতেন। তিনি বলেন,যুদ্ধ যখন চরমে উঠতো তখন এই সুরঙ্গে এসে তারা আশ্রয় নিতেন।

সেই যুদ্ধে দেড় লাখ মানুষ নিহত হন। বাদরি এবং এন্টন বেঁচে যান তাদের মধ্যে। এই দুই ব্যক্তি এখন একটি গ্রুপের সদস্য। গ্রুপের নাম ফাইটার্স ফর পিস। গ্রুপটা সাবেক যোদ্ধাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে। তারা এখন যুদ্ধ-সংঘাত বন্ধ করতে বিভিন্ন আলোচনা এবং কর্মসূচির আয়োজন করছে।

তাদের একজন বলেন,আমরা মানুষজনকে বলতে চাই একটা সময় যুদ্ধ চেয়েছিলাম। কিন্তু যুদ্ধ কখনোই কোন সমাধান হতে পারে না। গৃহ-যুদ্ধের বহু বছর পরেও এখনো লেবাননে রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে। একটা সময় ছিল খ্রিষ্টান এবং মুসলমানদের মধ্যে এই যুদ্ধটা হতো।

এখন মুসলমানদের দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে হচ্ছে এই সংঘাত। এটা খুবই ভঙ্গুর অবস্থা। যুদ্ধ থেবে বেঁচে যাওয়া একজন বলেন,তারা একজনের দিকে লক্ষ্য করে চারটি গুলি ছোড়েন।

ব্যক্তিটি সেখানেই স্পট ডেড অর্থাৎ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো। তিনি সেই বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।বাদরি আর এন্টন এখন হাতে হাত ধরে হাঁটছেন। তারা সুন্দর আগামী দিনের কথা বলছেন।

এস/