শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পরকীয়ার জেরে দুই সন্তানের জননী মনিমালা (২৭) নামে এক গৃহবধূকে তার স্বামী শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনার পর থেকে জসিম বেপারি পলাতক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ মে) গভীর রাতে উপজেলার চরনড়িয়া গ্রামে এই হত্যার ঘটনা ঘটে।
ওই গৃহবধূর স্বামী জসিম ব্যাপারী তাকে দুই হাত বেঁধে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ।
পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়ে। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চরনড়িয়া গ্রামের আবেদ আলী বেপারীর ছেলে জসিম বেপারীর সাথে খলিফাপাড়া গ্রামের ইয়ার বক্স সরদারের মেয়ে মনিমালা বেগমের ১১ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সাহাদাত (৮) ও মহিউদ্দিন (৬) নামে দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামী জসিম নরসিংদীর ডলফিন ফার্নিচার দোকানে রঙতুলি মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে পার্শ্ববর্তী এক নারীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন।
বাড়ি আসার পর ওই নারী জসিমকে মাঝে মধ্যে ফোন করতেন। এ নিয়ে মনিমালা ও জসিমের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। মাঝে মধ্যে জসিম বেপারী মনিমালাকে মারপিট করতেন। কখনো কখনো যৌতুকের জন্য মারপিট করে স্ত্রীকে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিতেন আর বলতেন আমি জঙ্গি সংগঠনে নাম দিয়েছি। বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব।
এ নিয়ে নড়িয়া পৌরসভায় সালিশও হয়। ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার রাতে এ নিয়ে পুনরায় দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাতের খাবার খেয়ে সন্তানদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ১২টা থেকে ২টার মধ্যে জসিম বেপারী তার স্ত্রী মনিমালা বেগমকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গামছা দিয়ে দুই হাত বেঁধে গলায় ওড়না পেচিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
রাত ৩টার দিকে আশপাশের লোকজন সেহরি খেতে উঠে তাদের ডাকাডাকি করেন। এতে সারা শব্দ না পেয়ে ঘরের ভেতর মনিমালার রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের লোকজনকে জানায়।
তারা ওই রাতেই পুলিশকে খবর দেয়। নড়িয়া পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় নড়িয়া থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
নিহত মনিমালার ভাই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, জসিম বেপারী নরসিংদী এলাকায় রঙের কাজ করতে গিয়ে এক মহিলার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে আমার বোনের সাথে মাঝে মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হতো। এবং যৌতুক দাবি করতো। যৌতুক না দেযায় আমার বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে মারপিট করতো। আর বলতো আমি জঙ্গি সংগঠনে নাম দিয়েছি। বাড়াবাড়ি করলে তোকে মেরে ফেলব। এ নিয়ে পৌরসভায় কয়েকবার দরবার সালিশ হয়েছে। জসিম আমার বোনকে হত্যা করে পালিয়ে গেছে। আমি ওর শাস্তি চাই।
নড়িয়া থানার ওসি মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, রাত ৩টায় খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মহিলাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। ঘাতক স্বামী পলাতক রয়েছে।
আজকের বাজার/ এমএইচ