শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নাসিক নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন, গণনা চলছে

অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমূখর পরিবেশে নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেন্দ্রে কেন্দ্রে গণনা চলছে।
শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহন শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
গত ৩০ নভেম্বর এই সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন। নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- বাংলদেশ আওয়ামী লীগের সেলিনা হায়াত আইভী (নৌকা), খেলাফত মজলিসের এবিএম সিরাজুল মামুন (দেয়ালঘড়ি), স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতা তৈমূর আলম খন্দকার (হাতি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মো. মাছুম বিল্লাহ (হাতপাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মো. জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মো. রাশেদ ফেরদৌস (হাতঘড়ি) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম (ঘোড়া)।
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯২টি কেন্দ্রের ১ হাজার ৩৩৩ ভোটকক্ষে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১। ২৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন ও সংরক্ষিত ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার বাসসকে জানান, নারায়ণগঞ্জে ১৯২টি ভোটকেন্দ্রের প্রতিটিতে একজন এসআইয়ের নেতৃত্বে পাঁচজন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পাল করেছেন। এছাড়াও আটজন পুরুষ ও চারজন নারী আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি বলেন, নাসিক নির্বাচনে পুলিশের ২৭টি ইউনিট স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে নিয়োজিত ছিল। এছাড়াও পুলিশের মোবাইল টিম ছিল ৬৪টি, প্রতি টিমে সদস্য ছিল পাঁচজন। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ১৪ প্লাটুন সদস্য দায়িত্ব পাল করেছে।
তিনি জানান, নাসিক নির্বাচনে র‌্যাবের স্ট্রাইকিং ফোর্স রয়েছে ৩টি, চেকপোস্ট রয়েছে ৬টি, টহল টিম রয়েছে ৭টি ও স্ট্যাটিক টিম রয়েছে ২টি।
নাসিক নির্বাচনকে ঘিরে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এ নির্বাচনে ১৯২টি ভোটকেন্দ্রে ও কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ হাজারের বেশি সদস্য নিয়োজিত রয়েছেন। প্রতি কেন্দ্রে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২৬ সদস্য।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই নির্বাচনে ২ হাজার ৯১২টি ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনের তুলনায় দেড়গুণ ইভিএম রাখা হয়।
নির্বাচনে সহিংসতা রোধে ১৪ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
এদিকে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে ৯টি সংস্থার ৪২ পর্যবেক্ষককে অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সংস্থাগুলো হলো- জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ (জানিপপ), সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন, আইন সহায়তা কেন্দ্র (আসক) ফাউন্ডেশন, সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস, তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, তালতলা যুব উন্নয়ন সংগঠন, রিহাফ ফাউন্ডেশন, বিবি আছিয়া ফাউন্ডেশন এবং মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা-মওসুস। তবে, পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালা মানার পাশাপাশি এসব সংস্থাকে ভোট শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের শর্ত দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।