জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেও (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, শিগগিরই নতুন আয়কর ও শুল্ক আইন আসছে, যা কর সহায়ক হবে।
শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কোর্স মাস্টারস অব অ্যাকাউন্টেন্সি ইন ট্যাক্সেশন প্রোগ্রামের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। কোর্সের পরিচালক ঢাবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের প্রফেসর ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর, আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট জামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ঢাবির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান প্রফেসর আব্দুল হাকিম প্রমুখ।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশের বিদ্যমান আয়কর এবং শুল্ক আইন নিয়ে বিভিন্ন সমালোচনা রয়েছে। বলা হচ্ছে এই আইন যুগোপযোগী নয়। কিন্তু নতুন সংবাদ হল কয়েক মাসের মধ্যেই নতুন আয়কর ও শুল্ক আইন আসছে। এই আইন অত্যন্ত সহজ এবং ব্যবসাবান্ধব হবে। ব্যবসায়ীদের হয়রানি নয় বরং সহায়তা করা হবে।
তিনি বলেন, আভ্যন্তরীণ সম্পদ আদায়ে স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে যাচ্ছে দেশ। এেেত্র বর্তমান সরকার বেশ কিছু কার্যকর পদপে নিয়েছে। এসব পদপে বাস্তবায়ন হলে কর আদায় বাড়বে।
অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে করের হার অনেক বেশি। অন্যদিকে কর আদায় কম। আর আমাদের কর ব্যবস্থা শুল্কের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু উন্নত দেশগুলো তা ব্যতিক্রম।
তিনি বলেন. মোট রাজস্ব আয়ের মাত্র ৩ শতাংশ ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর থেকে আসে। কিন্তু যুক্তরাজ্যে এই প্রায় ৮৬ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়াতে ৬২ শতাংশ, ভারতে ১১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ায় ৭ দশমিক ৬ শতাংশ।
তিনি বলেন, রাজস্ব ব্যবস্থাপনায় দতার অভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, জিডিপির অনুপাতে কর আদায়ে দণি এশিয়ায় সবচেয়ে দুর্বল অবস্থানে বাংলাদেশ। জিডিপির বিপরীতে বর্তমানে বাংলাদেশে কর আদায় ১০ দশমিক ২ শতাংশ। কিন্তু ভারতে এই হার ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ, নেপালে ১৪ দশমিক ৪ শতাংশ, পাকিস্থানে ১০ দশমিক ৬ শতাংশ এবং শ্রীলংকায় ১২ দশমিক ৪ শতাংশ কর আদায় হচ্ছে। আর এই অবস্থার উত্তরণে এনবিআরের ব্যাপক সংস্কার দরকার।
ড. মিজানুর রহমান বলেন, দেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়েছে। তবে সেভাবে দ জনবল বাড়েনি। বিদেশ থেকে লোকজন এসে এদেশে উচ্চ বেতনে চাকরি করছেন। এতে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে চলে যাচ্ছে। অন্যদিকে দতার অভাবে বিশাল জনগোষ্ঠী বেকার থাকছে। এই ঘাটতি পূরণে সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে পেশাদারদের সুবিধার্থে দেশে প্রথম এ ধরনের প্রোগ্রাম চালু করল ঢাবি।
তিনি আরও বলেন, এই কোর্স করলে একজন শিার্থীর অডিট, আয়কর, ভ্যাট, কাস্টমস, ব্যাংকিং, পুঁজিবাজার এবং কর আইনের মতো টেকনিক্যাল বিষয়ে দতা বাড়বে। এতে সহজে তারা পেশাগত কাজে উন্নতি করতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশের রাজস্বখাতের উন্নয়নে প্রথমবারের মতো মাস্টার অব অ্যাকাউন্টেন্সি ইন ট্যাক্সেশন’ কোর্স করল ঢাবি। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম (এআইএস) বিভাগের আওতায় এই কোর্স চালু হল। দুই বছর মেয়াদি এ কোর্সে রাজস্ব নিয়ে কাজ করে এ সংক্রান্ত সরকারি কর্মকর্তা, কর আইনজীবী, বিভিন্ন কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন। কোর্সে অংশগ্রহনকারীদের আরও উচ্চ শিক্ষার জন্য বিশ্বের খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট ট্রান্সফারের জন্য কাজ করছে ঢাবি।
আজকের বাজার : এসএস / ওএফ/ ২৭ জানুয়ারি ২০১৮