শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই বহু মানুষ ফেসবুকে লাইকের কাঙাল। লাইক পাওয়ার জন্য তারা দেওয়ানা, মরিয়া। লাইক পাওয়ার জন্য তারা কতো কিছুই না করেন। তাই বলে নিজের আত্মীয় এক শিশুকে জিম্মি করে বন্ধু-ফলোয়ারদের কাছে লাইকের আব্দার করতে পারেন কোনো ব্যক্তি, এটা সহজে বিশ্বাস করার মতো নয়। তবে এমন ঘটনাই ঘটেছে আফ্রিকার দেশ আলজেরিয়ায়।
গালফ নিউজের এক খবরে তথ্য জানা যায়।
গালফের খবরে বলা হয়, এক হাজার লাইক পাওয়ার আশায় আলজেরিয়ার এক ব্যক্তি তার আত্মীয় এক শিশুকে ১৫ তলার অ্যাপার্টমেন্টের জানালা দিয়ে ছুড়ে ফেলার হুমকি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। ছবিতে ক্যাপশন লিখেন, এক হাজার লাইক না হলে আমি তাকে নিচে ফেলে দেব।
ছবিটি ভাইরাল হয়ে যায়। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ওই ব্যক্তির বন্ধুরা তার সেই পোষ্টে লাইক দেয়নি। বরং তারা বিরক্ত ও ক্ষুব্ধ হন। এদের কেউ কেউ তার বিরুদ্ধে শিশু নিপীড়নের অভিযোগ তুলেন। তারা তাকে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়ারও দাবি জানান।
বিশ্ব গণমাধ্যমেও বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচার পায়। এদের কোনো কোনোটিতে ভুল করে ওই ব্যক্তিকে শিশুটির পিতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এতে বিষয়টি আরও বেশি আলোচিত-সমালোচিত হয়।
বিষয়টি আলজেরিয়া পুলিশের নজরে এলে তারা ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেন। তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলাও হয়।
অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।তিনি দাবি করেন, তিনি সিরিয়াসলি এটি করেননি। একেবারেই খেলার ছলে মজা করার জন্য করেছেন।
ছেলেটির পিতাও আদালতের কাছে তার ওই আত্মীয়কে ক্ষমা করে দেওয়া অনুরোধ জানান। আদালতে তিনি বলেন, তিনিও মনে করেন, ছেলার ছলেই ঘটনাটি ঘটেছে।
তবে আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তির ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হতে পারেনি। শিশুটির পিতার অনুরোধেও সাড়া দেয়নি। আদালত বলেন, খেলার ছলেও কেউ এমন কাণ্ড করতে পারেন না। এটি ছিল তার শিশুটির জন্য বেশ বিপদজনক বিষয়। আদালত তাকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন।
খেলাচ্ছলে হয়ে থাকলেও ঘটনাটি যে শিশুটির উপর মনের উপর দারুণ প্রভাব ফেলেছে তা ছবিগুলো দেখলেই বুঝা যায়। ছবিগুলোতে দেখা যায়, ওই সময় ছেলেটি ছিল ভীত-সন্ত্রস্ত।তার চোখে-মুখে ছিল তীব্র ভয়ের স্পষ্ট ছাপ।
এদিকে ব্যাপক সমালোচনা হওয়ার পরই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ছবিটি সরিয়ে নেয়।
আজকের বাজার: আরআর/ ২২ জুন ২০১৭