শেরপুরে মুজিব বর্ষে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য আবাসন নির্মাণ

জেলায় মুজিব বর্ষে তৃতীয় লিঙ্গের জন্য আবাসন প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। ২৬শে মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।

শেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরোজ আল মামুন বলেন, মুজিব বর্ষের উপহার স্বরূপ তৃতীয় লিঙ্গের লোকদের জন্য একটি অত্যাধুনিক আবাসন প্রকল্পে বাসস্থান নিশ্চিত করা হচ্ছে।

তিনি আজ ১৪মার্চ রোববার বলেন, শেরপুর সদর উপজেলার কামারিয়া ইউনিয়নের আন্ধারিয়া সুতিরপাড় মরাসুতি বিল সংলগ্ন ২ একর জমিতে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। আবাসনে থাকছে ৪০টি টিন শেড ঘর, ১টি মাল্টিপারপাস হলরুম, ৩টি নলকূপ, ২টি গোসলখানা, মাছ চাষের জন্য একটি বড় পুকুর, বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই আবাসনটি পরিবেশ বান্ধব করা হয়েছে।

ভূমি মন্ত্রণালয়ের গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের ২ পর্যায়ের আওতায় আবাসনটি নির্মাণ করা হচ্ছে। ৪০টি ঘর নির্মাণের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা, মাল্টিপারপাস হল রুমের জন্য ৭ লক্ষ ৯৩ হাজার টাকা, নলকূপের জন্য ৬০ হাজার ও গোসলখানা নির্মাণের জন্য ৫১ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে।

কামারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারী চাঁন বলেন, আমাদের ইউনিয়নে তৃতীয় লিঙ্গদের আবাসস্থল হওয়াতে আমরা খুব খুশি। কারণ আমরা মনে করি সকল নাগরিকই স্ব-অবস্থানে থাকার সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে। এবং তাদেরকে আমরা সাদুবাদ জানাই।

জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুব বলেন, স্বাধীনতা দিবসের আগেই তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীদের মুজিব বর্ষের শুভেচ্ছা স্বরূপ আবাসনটি তাদেরকে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য বুটিক, সেলাইসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা নিজেরাই কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারবে। ২ একর আবাসন প্রকল্পের মধ্যে পুকুড়ে মাছ চাষ এবং গবাদি পশু পালন করেও অর্থনৈতিক ভাবে সফলতা অর্জন করতে পারবে। এবং সেই সাথে মাল্টিপারপাস হলরুমে নিয়মিতভাবে তাদেরকে সরকারিভাবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ করে তোলা হবে।

শেরপুর জেলা হিজড়া কল্যাণ সংস্থার সভাপতি নিশি সরকার বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের থাকার জন্য আবাসন এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য আমরা জেলা প্রশাসক আনার কলি মাহবুবসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। তিনি বলেন, আমরা ভিক্ষা করতে চাই না। কাজ করে খেতে চাই। আবাসন ও প্রশিক্ষণ আমাদের নতুন করে জীবন শুরু করার অনুপ্রেরণা যোগাবে।

নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর জেলা কমিটির আহ্বায়ক শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও নাগরিক প্ল্যাটফরম জনউদ্যোগ শেরপুর কমিটির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শেরপুরে হিজড়াদের জন্য এক আশা জাগানিয়া কর্ম উদ্যোগ শুরু হয়েছে। এ কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য হলো সমাজের অবহেলিত ও অপাংক্তেয় তৃতীয় লিঙ্গ হিজড়াদের জীবনমান উন্নয়ন এবং আর্থ-সামাজিক দিক থেকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা। যাতে তারাও সমাজের মূলস্রোতে একিভুত হতে পারে।

হিজড়াদের আবাসন ও কর্মসংস্থানের এ উদ্যোগ সারাদেশের জন্য একটা রোল মডেল হয়ে উঠবে বলে আমরা মনে করছি। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান