সঞ্চয়পত্রের সুদের হার কমানোর ইঙ্গিত অর্থমন্ত্রীর

আগামী অর্থবছরের (২০১৭-১৮) বাজেটে সঞ্চয়পত্রের সুদহার সম্পর্কে কোনো প্রস্তাব না থাকলেও সুদহার শিগগিরই কমানো হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত আবারও এ বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়েছেন।

২৮ জুন বুধবার জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অনন্তকালের জন্য সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নির্দিষ্ট থাকতে পারে না। সুদের হারের সঙ্গে মূল্যস্ফীতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে, মূল্যস্ফীতি বাড়লে সুদের হার বাড়ে আর মূল্যস্ফীতি কমলে সুদের হার কমে। বিষয়টি তাই আমাদের পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

তবে অর্থমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, জাতীয় সঞ্চয়পত্রের সুদের হার নির্ধারণের কারণে কোনো পেনশনভোগী, নিম্ন মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত কেউ যাতে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সে বিষয়টি তার সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।

সঞ্চয়পত্রের সুদহার পুনঃনির্ধারণের (কার্যত কমানো) যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র খাত হতে আমাদের নীট ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকা যেখানে এপ্রিল, ২০১৭ পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে ৪২ হাজার ৯৮ কোটি টাকা। মূলত ব্যাংক ব্যবস্থায় সুদের হার কমার কারণে সঞ্চয়পত্রের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সঞ্চয়পত্র হতে অধিক ঋণ গ্রহণ করতে হচ্ছে। ফলে সুদ বাবদ ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে যা সরকারের ব্যয় ব্যবস্থাপনার ওপর একটি বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি করছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা চাচ্ছি সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে যে সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে তা যেন সঠিক ব্যক্তিরা পায়। এজন্য আমরা এর একটি পুর্ণাংগ তথ্য-ভান্ডার তৈরি করবো যেখানে ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের সাথে সঞ্চয়পত্রের তথ্যকে সম্পৃক্ত করা হবে। পাশাপাশি, আর্থিক বাজারকে আধুনিকীকরণে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে যাতে মানুষ বিনিয়োগের বিকল্প মাধ্যম খুঁজে পায়।

উল্লেখ, বর্তমানে ৪ ধরনের সঞ্চয়পত্র আছে। এসব সঞ্চয়পত্রে সর্বনিম্ন সাড়ে ৯ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়। অন্যদিকে ব্যাংকে আমানতের মেয়াদ ভেদে ৪ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ পাওয়া যায়।

গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে সম্পূরক বাজেটের উপর আলোচনাকালে অর্থমন্ত্রী সঞ্চয়পত্রের সুদহার পুনঃনির্ধারণ করার কথা বলেছেন। তখন তিনি বলেন, তারা সঞ্চয়পত্রের সুদহার এমনভাবে নির্ধারণ করতে চান, যাতে এর হার হয় ব্যাংক আমানতের সুহারের চেয়ে ২ শতাংশ বেশি।

আজকের বাজার: এলকে/এলকে ২৮ জুন ২০১৭