ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট-২০১৫ বাস্তবায়নে সবার সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) চেয়ারম্যান সি.কিউ.কে মোস্তাক আহমেদ।
২৩ অক্টোবর সোমবার ঢাকা চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি,ডিসিসিআই আয়োজিত ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট-২০১৫ সংক্রান্ত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা সুশাসন চাই তবে এর বাস্তবায়ন চাই না। আবার দেশে অনেক আইন থাকলেও এর বাস্তবায়ন নেই। কারণ যেকোনো আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হওয়াটা কঠিন। যেহেতু আইন পরিপালনের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়।
তিনি বলেন, এখানে অনেকগুলো রেগুলেটর রয়েছে যাদের মাঝে আইন বাস্তবায়নে কিছু না কিছু ফাঁক রয়েছে। এফআরসি সমন্বয়ের মাধ্যমে ওই ফাঁকগুলো দুর করে দেবে। এফআরসি যদি আইন বাস্তবায়ন না করতে পারে তাহলে সাধারণ মানুষের আস্থা নষ্ট হয়ে যাবে। এজন্য আমাদেরকে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সবাইকে একটি আইনের মধ্যে থাকা উচিত। কারণ আইন মানলে জীবনটা স্বস্তিদায়ক হয়ে ওঠে। আর এগুলো করতে হলে আমাদের আচার আচরণে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যদি কেউ এক ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে আরেক ব্যাংকে ঋণ পরিশোধ করেন- তাহলে ঋণ খেলাপি থেকে মুক্তি মিলবে না।
এফআরসি চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কার্যক্রমে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। কারণ আমাদের দায়িত্ব শুধু তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর অডিটরদের পর্যবেক্ষণ নয়; যেসব কোম্পানি তালিকাভুক্তির বাইরে তাদের কর্পোরেট বিষয়গুলো দেখাশুনা আমরাই করবো।
আর আগে বক্তব্য রাখেন আইসিএমএবির সভাপতি জামাল আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, এফআরসিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে হবে। কারণ এ কাউন্সিলের কাজের ওপর ফাইন্যান্সিয়াল খাতের আর্থিক প্রতিবেদনে স্বচ্ছতা নির্ভর করছে।
সেমিনারে আইসিএবির সভাপতি আদিব হোসেন খান বলেন, আমাদের দেশের অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড পরিপালন করাটা একটু কঠিন। কারণ আর্ন্তজাতিক স্ট্যান্ডার্ড পরিপালন হয় এখানে।
তবে রেগুলেটরদের ক্ষেত্রে আইন পরিপালনে ফাঁক থাকলে এফআরসি পদক্ষেপ নেবে। সেখানে সঠিক সিদ্ধান্তটাই নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অডিটররা কম মূল্যে অডিট করেন। আর সেটা আস্থাহীনতার একটা কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে এখানে মেধাবীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সেটা সম্ভব না হলে ভোগান্তির শিকার আমরাই হব।
স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই এর সভাপতি আবুল কাশেম খান বলেন, বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ে প্রবৃদ্ধি, স্থানীয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগে এফআরসি নতুন যুগের সৃষ্টি করবে। তাদের এখাতের শৃংঙ্খলা, বিনিয়োগকারীর আত্মবিশ্বাস ও মূল্য বাড়বে বলে মনে করেন তিনি।
সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তরা বলেন, এফআরসিকে আমরা সাধুবাদ জানাই তবে আমরা যেন আর হয়রানির শিকার না হই। এজন্য এ কাউন্সিল আরও সুসংহত হওয়া উচিত।
এসময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ, দেশের হিসাব ও নিরীক্ষা চর্চা উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০১৫ সালের ৬ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং অ্যাক্ট (এফআরএ ) পাসের পর একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর তা গেজেট আকারে প্রকাশ ও কার্যকর করা হয়।
এরপর ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল এক গেজেটের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এফআরসি গঠন করা হয়। এর প্রায় ১৪ মাস পর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন।
এফআরএ অনুসারে, দেশে হিসাব ও নিরীক্ষাচর্চা উন্নয়নে এফআরসির চারটি মূল বিভাগ থাকবে, যাদের কাজ হবে স্ট্যান্ডার্ড প্রণয়ন, ফিন্যান্সিয়াল রিপোর্টিং মনিটরিং, নিরীক্ষাচর্চা ও এনফোর্সমেন্ট। হিসাব ও নিরীক্ষা পেশার মানোন্নয়নের পাশাপাশি এফআরসি তাদের কাজ মনিটর করবে।
আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৩ অক্টোবর ২০১৭