সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ রোধে জাতিসংঘের ‘জিরো টলারেন্স’

সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করার পরিকল্পনা করছে জাতিসংঘ। আসন্ন জাতিসংঘের পরিবেশ সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান এ সম্পর্কিত চুক্তি সইয়ের ব্যাপারে আলোচনায় বসতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রে প্লাস্টিক দ্রব্য খুবই বড়মাত্রার হুমকি। এটি রুখতে বৈশ্বিক চুক্তি করা জরুরি। প্লাস্টিক দূষণ কোনো আন্তর্জাতিক সীমানা মানে না। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ খবর জানা গেছে।

সমুদ্রে চলমান জাহাজগুলোর প্লাস্টিক দ্রব্য ফেলা ইতোমধ্যেই নিষিদ্ধ। তবে, সমুদ্রে প্লাস্টিক দূষণ সম্পর্কিত এখনো কোনো আন্তর্জাতিক আইন নেই।আর এ লক্ষ্যেই আগামী ৪- ৬ ডিসেম্বর কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতিসংঘের পরিবেশ মন্ত্রীদের বৈঠকে প্রতিনিধিদলগুলো চুক্তির মাধ্যমে প্লাস্টিক সংকট মোকাবেলায় কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে জানা গেছে। তারা প্লাস্টিকের বর্জ্য ও মাইক্রোপ্লাস্টিক মোকাবেলা করতে বিশ্বব্যাপী পদক্ষেপের জন্য কার্যকারী কমটি গঠন করছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছায় এই কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে চায়। তবে প্রতিবারের মতো আন্তর্জাতিক আইনে তারা শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির মডেলে এই চুক্তির কাঠামো দাঁড় করানো হতে পারে। ওই কাঠামোতে দূষণ কমানো ও দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যে সম্মত হতে আইনতভাবে বাধ্য চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো। কিন্তু আঞ্চলিক ক্ষেত্রে দেশগুলোর কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।

প্রতিবছর ৮ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রের পানিতে গিয়ে মেশে। বড় প্লাস্টিকের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে ক্ষতিকর মাইক্রোপ্লাস্টিক বা প্লাস্টিক কণা তৈরি হয়। যাতে সামুদ্রিক প্রাণি, মাছ ও সমগ্র সামুদ্রিক জীবনের জন্য ক্ষতিকারক প্রভাব বয়ে আনে।পরিবেশবিদরা বলছেন, কী পরিমাণ প্লাস্টিক সাগরে ভাসছে ও তার উৎস কী সে তথ্য পাওয়াই হবে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ।

২০২৫ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জাতিসংঘ। তবে নরওয়ের নেতৃত্বাধীন একটি সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে দীর্ঘ মেয়াদি লক্ষ্যে ‘শূণ্য প্লাস্টিক বর্জ্য’ থাকা জরুরি। এতে সমুদ্র উপকূলের প্লাস্টিক বর্জ্য পরিষ্কার করার প্রতি জোর দেওয়া হয়েছে।

আসন্ন সম্মেলনে জাতিসংঘের পরিবেশ কর্মসূচি থেকে শক্তিশালী নেতৃত্ব ও সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আলোচনা হতে পারে। এমনকি নতুন করে জাতিসংঘের প্লাস্টিক সংস্থাও গঠিত হতে পারে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্লাস্টিক দূষণকারী দেশ চীন ইতোমধ্যেই আর্ন্তজাতিক নিয়মের ব্যাপারে সতর্ক বলে জানিয়েছে। অন্যান্য দূষণকারী দেশগুলোর মধ্যে প্রতিবেশী দেশ ভারত, ইন্দোনেশিয়া এ সিদ্ধান্তের সাথে সহযোগী মনোভাব পোষণ করেছে।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ১ ডিসেম্বর ২০১৭