সম্ভাবনাময় উন্নত সার প্রযুক্তি ‘ন্যানো’

ফসল উৎপাদনে সার একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উপাদান। যেটার কার্যকারীতার উপর নিরর্ভর করছে ফসলটা ভাল হবে কতটা, গ্রহণযোগ্য হবে, কতটা লাভবান হবে। এটা সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এলিমেন্ট। এবং সার ব্যবস্থাপনাটা আজকে থেকে না, বহু আগে থেকে হয়ে আসছে। আগের দিনে যেটা হতো ৬০ দশকের আগে, মানুষ বাড়িতে যে সমস্ত আর্বজনা থাকতো, সেগুলোকে এক জায়গায় জমা করতো। গরুর গোয়াল থেকে যে সমস্ত গোবর বা মুরগির বিষ্ঠা আসতো সেগুলোকে পচিয়ে জমিতে দিতো, তারপরে ভাল ফসল হতো। তখনকার সময়ের কথা যদি আমরা তুলনা করি ইল্ড, তাহলে দেখবো এখনকার ইল্ডের সাথে পার্থক্য রয়েছে।

৬০ দশকের পর সার যখন বাজারে আসে, ইউরিয়া, নাইট্রেজেন, ফসফারস এবং পটাশ, তখন সার দেওয়ার সাথে সাথে ফসল উৎপাদন বাড়া শুরু হলো। কিন্তু এখানেই শেষ না। এটা তো আজ থেকে কত বছর আগের কথা বলছি, প্রায় ৫০ বছর আগের কথা। কিন্তু ৫০ বছর সার ব্যবস্থাপনা ও প্রযুক্তিতে দ্রুত এগিয়েছে। গ্লোবাল প্রাকটিস পরির্বতন হয়েছে। এখন আমরা যদি মনে করি, ইউরিয়া, ফসফেট, পটাশ দেওয়ার পর কৃষক মনে করছে যে, উৎপাদন বেশি হয়। এটা একটা ভাল কথা। কিন্তু বিষয় হলো, যতটুকু উৎপাদন হলো, সে উৎপাদনটা আরো বেশি করা সম্ভব কিনা। এর পরিবর্তে কম সার দিয়ে করা সম্ভব কিনা। আর এই সার যা ব্যবহার করা হচ্ছে, তা পরিবেশের উপর প্রভাব পড়ছে কিনা। সে প্রভাব থেকে কিভাবে আমরা বেরিয়ে আসতে পারি। আমরা যদি চিন্তা করে দেখি, ইউরিয়া সার যেটা দেয়া হচ্ছে, ক্ষেতে­ দেওয়ার সাথে সাথে প্রায় ৭০ ভাগ সার হয় উড়ে যাচ্ছে, অথবা মাটির নিচে চলে যাচ্ছে। এটা একটা প্রাকৃতিক সম্পদ, দেশের সম্পদ। দেশের এতো মূল্যবান গ্যাস থেকে করতে হয়, বিদেশ থেকে আনতে হয়। এটা যদি মাটির নিচে চলে যায়, তাহলে তা মাটির নিচে পানিতে ঢুকে যায়। পানি দুষিত হচ্ছে। অথবা যে সমস্ত জীবযন্তু আছে তা মারা যাচ্ছে। তাহলে মাটির উর্বরতা একদিকে নষ্ট হচ্ছে। আরেকদিকে যদি এমোনিয়া আকাশে উড়ে যায় তাহলে তো আকাশ ছিদ্র হচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে কিন্তু গ্লোবাল ওয়ার্মিং হচ্ছে এবং তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এবং বাংলাদেশ হচ্ছে ওয়ান অফ দ্যা ভিক্টিম। তাহলে এখান থেকে বের হবার উপায়টা কি? তাহলে আমরা এভাবেই ইউরিয়া, ফসফেট ও পটাশ দেবো বা সার ব্যবস্থাপনা করবো? গ্লোবালি এখন কিন্তু নতুন টেকনোলজি বেরিয়েছে। এটাকে বলা হয় ন্যানো ফার্টিলাইজার।

ন্যানো ফার্টিলাইজার কি: একই জিনিসই, অনেক কম মাত্রায়, এক সাথে মিশিয়ে, কমপাউন্ডগুলোকে কম্প্যাক্ট করে এটাকে পলিমারাইজড করা হচ্ছে।  ফলে কি হচ্ছে, এটার লংজিবিটি বেড়ে যাচ্ছে। ফসলের গাছ দ্রুত এটা নিতে পারছে, একইসাথে এটা অনেক দিন ক্ষেতে থেকে যাচ্ছে। এতে লাভ হচ্ছে এই যে, একবার ব্যাবহার করে দুই ফসল ফলানো যাচ্ছে। কেননা, আমাদের দেশে এক বছরে প্রায় পনে দুইটা ফসল হয় বা দুইটা ফসল হয়। এখন দুইটা ফসলের জন্য যদি দুইবার সার দিতে হয়, তাহলে আনুপাতিকভাবে মাটি যেমন ভাবে পলিউটেড হচ্ছে। আবার এমোনিয়া আকাশে উড়ে যাচ্ছে, বায়ু দূষিত হচ্ছে। একইসাথে বিদেশি মূদ্রা খরচ করে আমরা এই সমস্ত সার আমদানি করছি দেশে। আমদানি করার পর হচ্ছে কি, বিদেশি মূদ্রা যেমন যাচ্ছে, তেমনি কৃষককে কিন্তু এগুলো কিনতে হচ্ছে। ভর্তুকি থাক আর যাই থাক, তারপরও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাহলে উপায়টা কি?  উপায় হচ্ছে ন্যানো ফার্টিলাইজার।

এই ন্যানো ফার্টিলাইজারের মাধ্যমে কি হচ্ছে? আপনি একটা ৫০ গ্রাম ওজনের একটা আলুকে কম্প্যাক্ট করে নাইট্রোজেন, ফসফেট, পটাশ কিংম্বা অন্যান্য প্লান্টে  যে সমস্ত ম্যাটেরিয়াল লাগে, কম্প্যাক্ট করে পলিমারাইজড করে, গাছের গোড়ায় দিলে, এটা একবার দিলে দুইটা ফসল করা সম্ভব। এটা আট মাস পর্যন্ত রাখা যাচ্ছে। তাহলে এখানে আমরা বুঝতে পারছি যে, টেকনোলজি কতটা কার্যকারিতা বা দক্ষতা বাড়িয়ে দিতে পারছে। অনেকে আমরা কোরিয়াতে দেখেছি, তারা কী করছে? ক্ষেতের বাহির থেকে একটা ট্যাবলেট ছুড়ে দিচ্ছে ক্ষেতের মধ্যে, এবং এই ট্যাবলেটটা পানিতে পড়ার সাথে সাথে ব্লাস্ট হয়ে এমন ভাবে ছড়িয়ে যাচ্ছে, আর এমন লেভেলে আয়োনাইজড করা আছে যে, গাছ খুব তাড়াতাড়ি নিতে পারছে। এই জলদি নেয়াতে লাভ হচ্ছে, ওয়েস্টেজ কমে যাচ্ছে, প্লান্টের বৃদ্ধি ভাল হচ্ছে। গ্রোথ ভালো মানে আপনার ইল্ড ভালো হচ্ছে।

তাহলে ফার্টিলাইজারে কিন্তু নতুন টেকনোলজি আসছে। এটা একটা বিষয়। দ্বিতীয়টি হলো এপ্লিকেশনের দিক দিয়ে। অনেক ক্ষেত্রে হয় কি, আমাদের দেশের কৃষক নাইট্রোজেন ফসফেট কিনে নিয়ে যায় বস্তা ধরে। তিনটা বস্তা নিলো, নিয়ে গিয়ে ক্ষেতের পাশে একটা চট পেড়ে নিলো। তার উপরে ঢেলে দিলো, তারপর হাত দিয়ে মিশানো শুরু করলো। এখন একটা ফসফেটের দানা একটা ইউরিয়ার দানার চেয়ে অনেক বড়। আবার একটা ইউরিয়ার দানা ফসফেটের দানার চেয়ে অনেক ছোট। আর পটাশিয়াম এর দানাটা কৃষ্টাল। তিনটাকে মিশানো হলো। ছড়ানোর সময় কি হলো, বড় দানাটা আগে হাতে আসবে, তাহলে যে এলাকাতে বড় দানাটা পড়লো, সেখানে ফসফেট বেশি পড়লো। তারপর আরেক পাশে ইউরিয়া বেশি পড়লো। পরের পাশে পটাশিয়াম বেশি পড়লো। একই ক্ষেতের মধ্যে, অর্থাৎ একটা কৃষকের ক্ষেত যদি বিশ শতক হয়, তার মধ্যে যদি তিন ভাগের এক ভাগে ফসফেট বেশি পড়ে, তারপর তিন ভাগের আরেক ভাগে ইউরিয়া বেশি পড়ে এবং তিন ভাগের অপর ভাগে পটাশিয়াম বেশি পড়ে, তাহলে কি হবে? ফসলের তারতম্য হবে। তখন কি হবে, আপনার ক্ষেতের মধ্যে ইল্ড গ্যাপ বেড়ে যাবে। আমাদের তো ন্যাশনাল ইল্ড গ্যাপ আছেই। কোনো কৃষক বি আর ২৮ ধান করে এক টন ইল্ড পাচ্ছে, আবার কোনো কৃষক চার টন ইল্ড পাচ্ছে, আবার কেউ কেউ সাত টন ইল্ড পাচ্ছে। এই যে ইল্ডগ্যাপ এটা জাতীয়ভাবে আছে। আবার কৃষকের ক্ষেতের মধ্যে, কিন্তু ইল্ডগ্যাপ হয়ে যাচ্ছে। এ হচ্ছে এই ফার্টিলাইজার এপ্লিকেশনের কারণে।

তো এখান থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব হবে কীভাবে। আমি যা বলছিলাম, একদিকে হলো প্রযুক্তি, আরেক দিকে হলো এটাকে ব্যবহার করতে হবে। আরেকটা হলো কিভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। এই তিনটা বিষয় মিলিয়েই কিন্ত এই সার থেকে আমাদের অনেক কিছু করার আছে। অনেক কিছু পাওয়ার আছে। এক দিকে প্রোডাক্টিভিটি, অর্থাৎ কম খরচ করে বেশি ফলন করা। আরেকদিকে কম ফার্টিলাইজার ব্যবহার করে কম দূষন করা, এতে গ্লোবাল ওয়ার্মিং টা কমে যাবে। আরেক দিকে হলো, আমাদের বিদেশি মূদ্রা বেঁচে যাবে। এই জিনিসটা নিয়ে আমাদের বিজ্ঞানীদের মাথা খাটানো দরকার এবং ন্যাশনাল পলিসি হওয়া উচিত এবং এটাকে ভালভাবে প্রমট করা উচিত। আমরা যেটা বলেছি আমাদের মিশনে, ক্রিয়েটিভ ওয়েলথ ফর দ্যা ফার্মারস। ওয়েলথের সাথে কিন্তু আমরা বলেছি উই আর প্রভাইডিং কমপ্লিট সল্যুয়েশন। এই পরিপূর্ণ সমাধানের মধ্যে কী আছে? একটা হলো ইনোভিশন অর্থাৎ নতুন কিছু উদ্ভাবন করা। আমরা যেটা শুরু করেছি বা করছি বা বাহির থেকে নিয়ে আসছি। আরেকটা হলো টেকনোলজি মানে প্রোডাক্ট, অর্থাৎ এতোক্ষণ বলছিলাম তিনটা ফার্টিলাইজারের কথা আলাদা আলাদা করে। আর এখন আমরা বলছি ন্যানো ফার্টিলাইজার, এটা একটা প্রোডাক্ট। তারপর বলছিলাম প্রাক্টিসের কথা, কিভাবে এটা প্রয়োগ করতে হবে। এইসব মিলিয়ে কিন্তু ব্যাপারটা একটা নতুন টেকনোলজি।

এরপর এটাকে কিভাবে কৃষকের কাছে কমিউনিকেট করতে হবে। এই কারণে আমরা একটা স্যাটালাইট ইমেজ সিস্টেম দিয়ে, আমরা কৃষকের কাছে টেকনোলজি প্রোমট করার জন্য একটা কমিউনিকেশন সিস্টেম স্থাপন করেছি বা করতে যাচ্ছি। এই চার পাঁচটা বিষয় মিলিয়ে কিন্ত একদিকে যেমন ইনোভেশন, আরেকদিকে টেকনোলজি, আরেকদিকে প্রাকটিস ও যোগাযোগ। এসবই কিন্তু হচ্ছে এবং এ উদ্যোগ আমরা নিয়েছি।

ইদানিংকালে আমরা যেটা করেছি, বাংলাদেশে তো ফার্টিলাইজার আইন আছে, পলিসি আছে এবং এগুলোর একটা মানদন্ড আছে। আমরা আমাদের দেশিয় এসব কর্মকান্ডের সাথে যারা সংশ্লিষ্ট আছেন, রেগুলেটরি কমিটিতে, টেকনিকাল কমিটিতে বা ন্যাশনাল কমিটিতে, তাদেরকে বুঝাতে সমর্থ হয়েছি যে, ন্যানো ফার্টিলাইজার হলো এখনকার সলিউশন বা সমাধান। আমরা ইতিমধ্যে ন্যানো ফার্টিলাইজারের টেস্ট ট্রায়েল শুরু করেছি বিদেশ থেকে আমদানি করে। এটা আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্টানে ইতিমধ্যে ট্রায়েল করছি, ইউনিভার্সিটির সাথে রিসার্চ ইনস্টিটিউটের সাথে। এক সময় যখন আমরা এটার রেজিস্ট্রেশন পাবো, তখন আমরা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করবো এবং কৃষককে দেবো। এটা তখন একেবারে হোমোজিনিয়াস এপ্লিকেশন হবে। কম ফার্টিলাইজারে বেশি কাজ করবে। একবার ফার্টিলাইজার দিলে কোনো কোনো ফসলে পরের ফসলটায় আর আলাদা করে সার দিতে হবে না, একই ফার্টিলাইজার থেকে করা সম্ভব হবে।

চা বাগানের গাছগুলো আলাদা আলাদা থাকে। গাছের গোড়ায় যদি ৫০ গ্রামের গ্রানয়েল (ন্যানো ফার্টিলাইজার) দিয়ে দেয়া হয়, সেটা চায়ের যে লাইফ সাইকেল আছে অর্থাৎ উৎপাদনের সময়টা সাত আট মাস, এই পুরো সময়টা চা উৎপাদন করতে পারবো। এখন কি করতে হয়, আমরা ছড়িয়ে দিই। এমনিতে চা বাগানে ঢাল থাকে। ছড়িয়ে দিলে কি হয় বৃষ্টি হলে পানিতে গড়িয়ে নিচে চলে যায়। অনেক সময় লিচিং হয় না, মাটিতে মেশে না। সেক্ষেত্রে গাছের গোড়াতে ফার্টিলাইজারটা ঠিকমত পৌছাচ্ছে না। এই ন্যানোর ফলে হবে কি, এই ন্যনো ফার্টিলাইজার চা বাগানে কিন্তু অনেক বেশি দেওয়া লাগবে না। বেশিবার দেওয়া লাগবে না এবং তার ফলনটা  ঠিকই পাবে। এটা একটা উপায়। এরপর লিকুইড আছে। এখন ধরেন লেবার কষ্ট অনেক বেশি। এক দিন একজন শ্রমিক এক একর জমিতে সার ছিটাতে য়ায়, তার পাঁচশ কিংবা ছয়শ টাকা খরচ দিতে হয়। সে ক্ষেত্রে যখন চাষ করা হচ্ছে, তখন যদি ট্রাক্টর মাউন্টেড ফার্টিলাইজার যদি থাকে। লিকুইড ফার্টিলাইজারগুলো এবং কোথায় কি রকম দরকার সেভাবে পরিমান মত যদি মিক্স করা থাকে এবং এসমস্ত ট্রাক্টারে স্যাটেলাইট ইমেজের মাধ্যমে জমির কোথায় কি পরিমান দরকার সে সিগন্যাল ব্যবহার করে সারা জমিতে একটা ব্যালান্সড সার দেয়া যায়। সেক্ষেত্রে যেমন বাড়তি লেবার লাগবে না, তেমনি বাড়তি সারও লাগবেনা। এর মাধ্যমে যেখানে যেটার কমতি আছে সেটাও দেওয়া সম্ভব।

ইতিমধ্যে আমরা ইন্টারনাল টেস্ট করে দেখেছি, এবং এটা খুব ভাল কাজ করে। এখন আমরা কনভিন্সড করার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান অর্থাৎ যারা ইনোভেশন করে, সে সমস্ত প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করছি। এটার অনুমতির জন্যও আমরা রেগুলেটরের সাথে কাজ করছি। ফার্টিলাইজারের ক্ষেত্রে রেগুলেটরের প্রক্রিয়া একটু লম্বা, তবুও আমি মনে করি দুই বছরের বেশি সময় লাগবে না। তখন এদেশে কিন্তু ন্যানো ফার্টিলাইজার চলে আসবে এবং আমরা এটা দিতে পারবো। পাশাপাশি যেটার কথা আমি আপনাকে বলছিলাম সেটা লিকুইড ফার্টিলাইজারের কথা। ট্রাক্টার মাউন্টেড কন্টেইনারে করে আমরা যদি এটা মাটিতে পাঞ্চ করতে পারি, তাহলে হবে কি, ডিহাইড্রেশন হয়ে উড়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে, এবং ফসল কিন্ত যতটুকু হওয়ার কথা ছিল তা পাওয়া যাবে। একটা ছোট একটা উদাহরণ দেয়া যাক। আমরা কুমড়া গাছ লাগাই। একটা কুমড়া গাছ একটা জায়গা থেকে উঠে সারা মাচা ছড়িয়ে যায়। এতে অনেকগুলো কুমড়া ধরবে। এখন যদি এই কুমড়া গাছের গোড়ায় আপনি ন্যানো ফার্টিলাইজার দিয়ে দেন, তাহলে সাত আট মাস ধরে যতদিন কুমড়া ধরতে থাকবে ততোদিন সমানভাবে সার পেতে থাকবে। কিন্তু যদি অন্য সার দেই তাহলে, বারবার দিতে হবে এবং কুমড়া গাছের শিকড় যেহেতু মাটির বেশি নিচে যায় না। সেজন্য অনেক সময় বেশি সার পেয়ে পুড়ে যেতে পারে। বা গাছের ক্ষতি হতে পারে। এক্ষত্রে কিন্তু রিস্কটা কমে যাচ্ছে। একইসাথে ফলনট্ওা ভাল হচ্ছে, মিষ্টতাও ভাল হবে।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে অর্গানিক ফার্টিলাইজার। আমাদের জমিগুলো প্রতিনিয়ত চাষবাষের কারণে কম্প্যাক্ট হয়ে যাচ্ছে। মাটির নিচে কিন্তু অক্রিজেন দরকার এবং মাটি ফাপা হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে এখানে যদি অর্গানিক সার না দেই তাহলে কিন্তু জমির সমস্যা হবে। আমাদের দেশে কিন্তু অনেক কিছুর ওয়েস্টেজ হয়, যেমন কুসরের ছোবড়া, পাটকাঠি, বাড়ির আবর্জনা, গোবর, মুরগির বিষ্ঠা সবকিছু মিলে কিন্তু অনেক ওয়েস্ট আছে। এই ওয়েস্টগুলোকে যদি আমরা সঠিক নিয়মে একসাথে করে মাইক্রোবিল দিয়ে ট্রিট করতে পারি, তাহলে হবে কি এই সমস্ত ফার্টিলাইজর যেমন একদিকে মাটি ফাপা করবে। আরেকদিকে পানির রিটেনশন বাড়াবে। পানি ধারণক্ষমতা বাড়াবে। সাথে সাথে শিকড়ের সক্ষমতা বাড়াবে এবং গাছের যেসমস্ত উপাদান দরকার হয় তা সাপ্ল্য়া দেবে। দেখা যাবে যে এই অর্গানিক ফার্টিলাইজার ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা বাড়বে। অন্য সার প্রয়োগের পর এই সারগুলো গাছ নিতে পারবে। তাতে আপনার ফসলের ফলন অনেক বেড়ে যাবে।

ড. এফ এইচ আনসারী,
ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী, এসিআই এগ্রিবিজনেস