সরকারকে বাধ্য করার সুযোগ ইসির নেই: সিইসি

রাজনৈতিক সমঝোতার কোনো উদ্যোগ নির্বাচন কমিশন (ইসি) নেবে না জানিয়ে সিইসি কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, ‘সংবিধান ও আইনের মধ্যে থেকে একাদশ সংসদ নির্বাচন হবে। সংসদ ভেঙে সহায়ক সরকারের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের করার কিছু নেই। কারণ সরকারকে এ ব্যাপারে বাধ্য করার ক্ষমতা ইসির নেই।’

২৬ অক্টোবর বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। তিন মাস ধরে চলা অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপ সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং ইসির ভারপ্রাপ্ত সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সংলাপে যেসব সুপারিশ এসে ইসির এখতিয়ার যেগুলো আছে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে। বাকিগুলো সরকার ও সংসদের কাছে পাঠানো হবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যেগুলো আমাদের করার আছে তা আমরা বাস্তবায়ন করবো। আইন প্রণয়নের বিষয়ে সংসদের কাছে পাঠাবো ও সাংবিধানিক বিষয়গুলো নিয়ে প্রস্তাব সরকারের কাছে পেশ করবো।’

কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘বিদ্যমান আইনে সেনা মোতায়েনে কোনো বাধা না থাকলেও ভোটের সময়কার পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সব দলকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে মাঠ প্রশাসনের পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকবে ইসির কাছে।’

ঘোষিত রোডম্যাপ মেনে অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শেষ করতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, ‘চার শতাধিক সুপারিশসহ অভিন্ন অনেক প্রস্তাব নিয়ে সংকলনের কাজ শুরু হচ্ছে। সাংবিধানিক, আইন প্রণয়ন ও ইসির করণীয়- এ তিন ভাগে এসব প্রস্তাবকে বাছাই করা হচ্ছে। নভেম্বরের মধ্যে সংলাপে পাওয়া সুপারিশ সংকলন করে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে বই আকারে প্রকাশ করা সম্ভব হবে আশা করি।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘সংসদ ভেঙে দেয়া, সহায়ক সরকার গঠনের বিষয়গুলো সাংবিধানিক। এগুলো সংবিধানে যেভাবে আছে সেভাবেই চলবে। আর সীমানা পুনঃনির্ধারণ ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন, সেনা মোতায়েন ও নির্ভুল ভোটার তালিকার মতো বিষয়গুলো ইসির এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনকালীন মাঠ প্রশাসনের সব ক্ষমতা সংবিধান অনুসারে ইসির অধীনে থাকবে । ইসির স্বল্পসংখ্যক নিজস্ব কর্মকর্তা দিয়ে ভোট আয়োজন সম্ভব না হওয়ায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়-বিভাগের ১০-১২ লাখ লোকবলকে মাঠে থাকতে হয়। ভোটের সময় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ আমাদের থাকে; ইসির নিয়ন্ত্রণ আছে ও থাকবে। সুষ্ঠু ভোটের জন্য আইনে নতুন করে পরিবর্তনের দরকার নেই; বিদ্যমান আইন প্রয়োগই যথেষ্ট। তা করতে পারলেই ভোটে শৃঙ্খলা থাকবে। ভোটে দায়িত্ব অবহেলা বা আইনের ব্যত্যয় ঘটলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক সমস্যা রাজনৈতিকভাবেই সমাধান হওয়া ভালো। আমরা সমঝোতার উদোগ নেব না।’ এ সময় ভোটের আগে আর কোনো সংলাপ না করার ইঙ্গিত দেন সিইসি।

এক প্রশ্নের জবাবে কে এম নূরুল হুদা বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো চাপ আসেনি। সরকারের কোনো মন্ত্রী, এমপি বা কারো কাছ থেকে কোনো চাপ আমরা পাইনি। আগামীতে কখনো এলে তাও প্রত্যাখ্যান করবো।’ সংলাপ শেষ করে অংশীজনের আস্থা অর্জন করতে পেরেছেন দাবি করে সিইসি বলেন, ‘বিএনপিসহ সব দল আগামী সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে আশা করি।’

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৬ অক্টোবর ২০১৭