সরকার ব্যাংক খাতকে দেউলিয়া করেছে: ফখরুল

রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ দিয়ে সরকার ব্যাংক খাতকে দেউলিয়া করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১০ মে) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ব্যাংকিং খাত নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল বলেন, ‘সরকার নিজেদের লোকদের সরকারি ব্যাংকগুলোতে বড় পদে বসিয়ে লুটপাট করছে। এর মাধ্যমে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে। তারা রাজনৈতিক বিবেচনায় ঋণ দিয়ে দেশের ব্যাংক খাতকে দেউলিয়া করে দিয়েছে।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরি হয়েছে সরকারের মদদে। কারণ এফবিআই বলেছে ব্যাংকের অর্থ চুরি করা লোকজন ব্যাংকের ভেতরেই অবস্থান করছে।’

ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশের সবচে বড় ব্যাংককে একটি বিশেষ গ্রুপের হাতে দিয়ে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। এখন শোনা যাচ্ছে ইসলামী ব্যাংককেও তারল্য সংকট দেখা দিয়েছে। আমানতকারীরা তাঁদের টাকা পাচ্ছেন না ঠিক ভাবে। এমনকি ব্যাংকের সরকার নিয়োগকৃত চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শুধু ব্যাংকিং খাতে লোপাট নয়, বড় বড় মেগা প্রজেক্ট দুর্নীতি, শেয়ার বাজার দুর্নীতি করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। বিএনপি ক্ষমতায় এলে আর্থিক খাতের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে। এদের বিচার জনতার আদালতে অবশ্যই হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতকে ধ্বংস করতে সরকার এখন নতুন নিয়ম করেছে। আগে বেসরকারি ব্যাংকের পরিচালক পদে এক পরিবারের দুজন করে তিন মেয়াদে ছয় বছর থাকতে পারত। এখন সরকার সেটিকে পরিবর্তন করে এক পরিবারের চারজনকে তিন মেয়াদে ৯ বছর ক্ষমতায় থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছে। যাতে বড় বড় পুকুর চুরি করতে পারে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যাংকগুলো তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছে। আমানতকারীরা তাদের টাকা ফেরত নিতে চাইছে কিন্তু তাদের আমানত ফেরত পাচ্ছেননা। চেক দিলেও সময় মতো টাকা পাচ্ছে না।’

অর্থমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ফখরুল বলেন, ‘ব্যাংকের প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা লোপাট হলেও অর্থমন্ত্রী বলছেন এটি বড় কিছু নয়। আমাদের বুঝে আসে না আর কত টাকা লোপাট হলে আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে বড় কিছু মনে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শেখ আবদুল হাই বাচ্চু রাজনৈতিক বিবেচনায় এমডি পদে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে বেসিক ব্যাংকের দুর্নীতি শুরু হয়। তিনি অনিয়মের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে ব্যাংককে ধ্বংস করে দিয়েছেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আবদুল মইন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী সভায় উপস্থিত ছিলেন।

আরজেড/