সরকার ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার দেশের অর্থনীতিকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করতে ‘ব্লু-ইকোনমির’ সম্ভাবনা অন্বেষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে আমাদের সমুদ্র সম্পদের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে ‘ব্লু- ইকোনমি’ নীতিমালা ঘোষণা দিয়েছি এবং এই সম্পদ ব্যবহার করে আমাদের অর্থনীতিকে যেন আরো গতিশীল করতে পারি, শক্তিশালী করতে পারি মজবুত করতে পারি তারজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
প্রধানমন্ত্রী আজ সকালে মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ৪১তম ব্যাচ ক্যাডেটদের ‘মুজিববর্ষ’ পাসিং আউট প্যারেডে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চট্টগ্রামের মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার জাতিসংঘ ঘোষিত এমডিজি যেমন সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে তেমনি এসডিজিও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। করোনার কারণে এই অগ্রগতি কিছুটা বাধার সম্মুখীন হলেও অর্থনৈতিকভাবে আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েই এগিয়ে যাচ্ছি। টেকসই উন্নয়নের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহার করে এসডিজি-১৪ এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
আমাদের বঙ্গোপসাগর আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, এখানে যে বিশাল সম্পদ রয়েছে সেই সম্পদ আমাদের আহরণ করতে হবে। এখানে যেমন মৎস সম্পদ আছে তেমনি অন্যান্য সামুদ্রিক সম্পদও আছে। সেগুলো আহরণ করে আমরা আরো আমাদের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে পারবো-এটাই আমি আশা করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মাছে ভাতে বাঙালি, কাজেই এই মাছ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। যে সম্পদ আমাদের শুধু পুষ্টি জোগায় না এই সম্পদ প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে বিদেশে রপ্তানী করেও আমারা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি। সেজন্য মৎস উৎপাদনের আমরা গবেষণা করে যাচ্ছি এবং অনেক সাফল্যও পেয়েছি। কিন্তু, সমুদ্র সম্পদ আহরণে আমাদের এখনো অনেক কাজ করতে হবে এবং আমরা সেটা করবো বলেই বিশ্বাস করি।
তিনি পাসিং আউট ক্যাডেটদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি চাইবো, তোমরা সবসময় সাহসের সাথে কাজ করবে এবং তোমাদের লব্ধ জ্ঞান এক্ষেত্রে আরো বেশি সহায়ক হবে বলে আমি বিশ^াস করি। আমি আশা করি, আমাদের সরকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তোমাদের ভূমিকা থাকবে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। তোমরাই হবে আগামীর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশের কর্ণধার। প্রধানমন্ত্রী ক্যাডেটদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।
জাতির পিতার সুদূরপ্রসারি পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় চট্টগ্রামস্থ কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে ১৯৭৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম মেরিটাইম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘মেরিন ফিশারিজ একাডেমি’।
এ বছর একাডেমির ৪১তম ব্যাচে নটিক্যাল বিভাগে ৩৩ জন, মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ৩১ জন এবং মেরিন ফিশারিজ বিভাগে ২০ জন ক্যাডেটসহ সর্বমোট ৮৪ জন নারী ও পুরুষ ক্যাডেটের পাসিং আউট হয়।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম কৃতি ক্যাডেটদের মাঝে তাদের সাফল্যের স্বীকৃতি স্বরূপ পদক বিতরণ করেন। এইচ এম বেনজীর আহমেদ সকল বিষয়ে সর্বোচ্চ মান অর্জন কারি চৌকষ ক্যাডেট হিসেবে ‘বেস্ট অলরাউন্ডার গোল্ড মেডেল’ লাভ করেন।
মৎস ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মুহম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে মেরিন ফিসারিজ একডেমির কার্যক্রমের ওপর একটি ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।