সরকার মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
আগামীকাল (৮ সেপ্টেম্বর) ‘বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস উপলক্ষ্যে আজ বুধবার দেয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘অস্টিও-আর্থ্রাইটিস রোগের ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপি কার্যকরী চিকিৎসা’।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের প্রতিবন্ধী ও প্রতিবন্ধিতার ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট বাস্তবায়ন করতে সর্বত সহায়তা প্রদান করছে। আমরা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ১০৩টি প্রতিবন্ধীসেবা ও সাহায্য কেন্দ্র এবং ৩২টি মোবাইল থেরাপি ভ্যানের মাধ্যমে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রান্তিক মানুষকে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছি। অটিজম রিসার্চ সেন্টারের মাধ্যমে অটিজম সমস্যাগ্রস্থ শিশু ও ব্যক্তিকে বিনামূল্যে ম্যানুয়াল এবং ইনস্ট্রুমেন্টাল থেরাপিসহ কাউন্সেলিং সেবা প্রদান করছি।’
সিআরপি অস্টিও-আর্থাইটিস চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অসামান্য অবদান রাখবে এমন আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার দক্ষতার সাথে অস্টিও-আর্থ্রাইটিসসহ বাত-ব্যথা ও প্যারালাইসিস রোগীদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করেছে। বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে- চল্লিশোর্ধ ব্যক্তিদের প্রায় ২৭.৭ শতাংশ অস্টিও-আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং এই রোগের চিকিৎসায় ফিজিওথেরাপি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু সিআরপি প্রতি বছর ৯টি শাখার মাধ্যমে দেশের প্রায় ৮০ হাজার রোগীকে ফিজিওথেরাপি সেবা প্রদান করে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনি অঙ্গীকার অনুযায়ী গত সাড়ে ১৩ বছরে আমরা স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছি। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছিলাম। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে কমিউনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দেয়। ফলে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয়।’
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের পর স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে পুনরায় আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করি। এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করেছি। যেখানে বিনামূল্যে ৩০ প্রকার ঔষধ দেওয়া হচ্ছে। আমরা জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি-২০১১ প্রণয়ন করেছি, ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা’ অর্জনকে অগ্রাধিকার দিয়ে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন শুরু করেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কার্যক্রম চালু হয়।
তিনি বলেন, ‘যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা প্রদানের লক্ষ্যে জাতির পিতার নির্দেশে ডা. আর জে গাস্টের সরাসরি তত্ত্বাবধানে তৎকালীন মুক্তিবাহিনী হাসপাতাল বর্তমানে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ট্রমাটোলজি অ্যান্ড অর্থোপেডিক রিহ্যাবিলিটেশন (নিটোর) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এদেশে পুনর্বাসন সেবার সূচনা হয়।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এরই ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যের নাগরিক ভ্যালরি অ্যান টেইলর বর্তমান শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গুদাম ঘরে সিআরপি’র প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সিআরপি পক্ষাঘাতগ্রস্থ রোগীদের চিকিৎসা, শিক্ষা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ, কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসনসেবা প্রদান করে যাচ্ছে।’
বাণীতে তিনি বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস উপলক্ষ্যে ফিজিওথেরাপি বিভাগ, সিআরপি বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করছে জেনে আনন্দ প্রকাশ এবং এ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল অনুষ্ঠানের সর্বাঙ্গীণ সফলতা কামানা করেন।
বিশ্বের ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকদের ভূমিকাকে স্বীকৃতি প্রদান এবং এই পেশার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্ব ফিজিওথেরাপি সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড ফিজিওথেরাপি’-এর উদ্যোগে ১৯৯৬ সাল থেকে প্রতি বছর ৮ই সেপ্টেম্বর এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হচ্ছে।