সাংবিধানিক শাসনামলে কারাগারে আদালত বসানো ‘অযৌক্তিক’ বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে ও সম্পাদক ব্যারিস্টার এম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় সংবিধান, আইনের শাসন, গণতন্ত্র, নির্বাচন ও সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার বিচারের জন্য পুরাতন ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগারের একটি কক্ষকে অস্থায়ী আদালত ঘোষণা করে সরকার। ওই কারাগারে একমাত্র বন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, যিনি এই চ্যারিটেবল মামলার আসামি। মূলত তার বিচারের লক্ষ্যেই কারাগারে আদালত বসানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে মতবিনিময় সভায় ড. কামাল বলেন, ‘জেলখানায় আদালত এটা স্ববিরোধী কথা। জেলখানা জেলখানাই, আদালত আদালতই। জেলখানায় আদালত কেন হলো, কীভাবে হলো, কোন আইনে হলো?’
তিনি আরো বলেন, ‘সামরিক শাসনামলে কারাগারে আদালত বসিয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল তাহেরকে সাজা দেয়ার বিষয়টিকে দেশের মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। বেসামরিক শাসনামলে যখন সাধারণ সংবিধানে দেশ চলছে, তার মধ্যে তথাকথিত জেলখানায় কেন আদালত গঠন করা হয়? কারাগারে আদালত-এটা অযৌক্তিক।’
সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহার সাথে সরকারের আচরণকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে, এর বিচারও এক দিন হবে বলে মন্তব্য করেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম এই সদস্য।
সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন কতটা যৌক্তিক সে বিষয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল।
তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ভোট আয়োজনে নির্বাচনকালীন সরকারকে অবশ্যই নিরপেক্ষ হতে হবে।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে ড. কামাল বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকার সময় সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে ২৩ দফা দিয়েছিলেন তার প্রয়োজনীয়তা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। ওই ২৩ দফা অনুসরণ করলেই দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী ২৩ দফা দিয়েছিলেন, সরকারে থাকা অবস্থায় এই ২৩ দফা থেকে সরে যাবেন না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এই সিনিয়র আইনজীবী।
আগামী সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে যে সর্বদলীয় ঐক্যের ডাক দেয়া হয়েছে সেখানে দল হিসেবে জামায়াত ইসলামী থাকছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘না। তাদেরকে জাতীয় ঐক্যে নেয়া হবে না।’
আজকের বাজার/এমএইচ