সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যাকাণ্ডের ৬ বছর আজ। এই দম্পতির একমাত্র ছেলে মেঘের জীবন এখন সত্যিকার অর্থেই মেঘে ঢাকা। বাবা-মা হত্যার ৬ বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কোন বিচার হয়নি। উপরন্তু দীর্ঘ এই সময়ে প্রতিবেদন জমা দিতে ৫৪ বার সময় নিয়েছে র্যাব।
এতো আলোচনা-সমালোচনার পরও দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই চাঞ্চল্যকর এই মামলার। হত্যাকাণ্ডরে প্রায় দু’মাস পরই, মামলা যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ থেকে র্যাবের কাছে। শুরু হয় নতুন করে তদন্ত। নেয়া হয় সন্দেহভাজন ২১জনের ডিএনএ নমুনা ও নানা আলামত। যেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় আমেরিকায়। কিন্তু বছরের পর বছর যায়, সেই পরীক্ষার ফল আর জানা যায় না।
ঘটনার পর থেকে তদন্ত মোড় নিয়েছে নানাবাঁকে। কিন্তু কোনটিরই কূল-কিনারা হয়নি। খুনরে সময় খোয়া যাওয়া সাগর সারোয়ারের ল্যাপটপ আর মোবাইল ফোনের হদিস মেলেনি আজও। মামলাটি ঠিক কোন পর্যায়ে আছে তা-ও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে এখন কোন কথা বলতেও রাজি নয় তদন্ত সংস্থা। অগ্রগতির প্রতিবেদন জমা দিতে অধর্শতাধিক বার সময় নিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
ঢাকা মহানগরের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেন, যেহেতু র্যাব দীর্ঘ দিন ধরে তদন্ত করেও কোনো প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি, এ মামলা অন্য কোনো তদন্ত সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা উচিত। তবে অন্য তদন্ত সংস্থার কাছেও মামলাটি অনেক চ্যালেঞ্জিং হবে কারণ এখনও পর্যন্ত মামলার কোনো ক্লু খুজে পাওয়া যায়নি।
মামলার দীর্ঘসূত্রিতায় হতাশ বাদী পরিবার। আদৌ কোনো দিন বিচার পাবেন কিনা তা নিয়েও সংশয় আছে তাদের।
মামলার বাদী ও নিহত রুনির ভাই নওশের রোমান জানান, গত এক বছর র্যাবের সাথে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। এই হত্যার কোনো বিচার মনে হয় পাব না। মামলার সাথে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারী সংস্থা এবং সরকার এ ব্যাপারে অন্তরিক না।
চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি এখন আর দীর্ঘায়িত করা সমীচীন নয় বলে মনে করেন পুলিশের সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন, মামলাটি দীর্ঘায়িত না করে যতোটুকু আলামত পাওয়া গেছে তার ভিত্তিতে চার্জশট গঠন করা উচিত। আর কোনো কিছুই না পাওয়া গেলে তা রিপোর্টের মাধ্যমে মামলাটি নিষ্পত্তি করা উচিত।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি দম্পতি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে নিজ বাসায় খুন হন। হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
আজকের বাজার : আরএম/১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮